কানাডায় পদ্মাসেতুর শুনানি ১ নভেম্বর
ঢাকা জার্নাল: কানাডার আদালতে চলমান বাংলাদেশের পদ্মাসেতু দুর্নীতির প্রাক-শুনানি (প্রি-ট্রায়াল)আরেকদফা পিছিয়েছে। নতুন প্রাক-শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ১ নভেম্বর। টরেন্টোর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কানাডার সময় বৃহস্পতিবার সকালে (বাংলাদেশের সময় রাত প্রায় ৯টা) অন্টারিওর সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিসের আদালত এ শুনানির দিন নির্ধারণ করে।
বৃহস্পতিবার কানাডার এ আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা এই মামলায় এসএনসি লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেসকে আসামি করতে চায়।
এ আবেদনের কারণে এসএনসি লাভালিনের সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল এবং রমেশ শাহর সঙ্গে কেভিন ওয়ালেসও আসামি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হতে যাচ্ছেন। তবে এ শুনানিতে বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে মামলায় অন্তর্ভূক্ত করার কথা উল্লেখ করা হয়নি।
পদ্মাসেতু দুর্নীতির ঘুষের তালিকা তৈরি করার অভিযোগে কানাডায় গ্রেফতার হয়েছিলেন এসএনসি লাভালিনের কর্মকর্তা ভারতীয় বংশোদ্ভূত রমেশ শাহ ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মোহাম্মদ ইসমাইল। গ্রেফতারের পর তারা এখন জামিনে রয়েছেন।
কানাডার অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিসে তাদের বিচার চলছে। সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিসে দুই দফা তারিখ পরিবর্তনের পর ৯ সেপ্টেম্বর প্রাক-শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তখনও প্রাক শুনানি হয়নি। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতে ১ নভেম্বর প্রাক-শুনানির দিন নির্ধারণ করে।
কানাডার আদালতের নিয়মানুসারে কোনো অভিযোগ চূড়ান্ত বিচারে যাবার আগে তার প্রাক শুনানী হতে হয়। প্রসিকিউশন কেভিন ওয়ালেসকে প্রাক শুনানী থেকে অব্যাহতি দেওয়ারও আবেদন জানায়।
জানা গেছে, ১ নভেম্বর সকলপক্ষের আইনজীবী আদালতে এসে মামলা কিভাবে অগ্রসর হবে তা নির্ধারণ করবেন।
প্রসঙ্গত, গত দু’বছর ধরে পদ্মাসেতু দুর্নীতির অভিযোগ মহাজোট সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দেয়। এ সময় বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, পদ্মাসেতুর পরামর্শকের কাজ পাইয়ে দিতে বিতর্কিত এসএনসি- লাভালিনকে ঘুষ দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল বাংলাদেশের প্রভাবশালী মহল।
কাকে কত শতাংশ ঘুষ দেওয়া হবে, ডায়েরিতে তার একটি তালিকা করেছিলেন এসএনসি-লাভালিনের সাবেক কর্মকর্তা রমেশ শাহ। আর ইসমাইলের ল্যাপটপেও ঘুষ-দুর্নীতির কিছু তথ্য ছিল।
কানাডিয়ান পুলিশ ইসমাইল এবং রমেশ শাহর বাসা থেকে উদ্ধার করা ল্যাপটপ ও ডায়েরিতে পদ্মাসেতু প্রকল্পে ঘুষের কিছু তথ্য পায়। এর মধ্যে রমেশ শাহর ডায়েরিতে কিছু সাংকেতিক নাম পাওয়া যায়। এসএনসি-লাভালিনকে কাজ পাইয়ে দিতে কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে, সেই তালিকাও রমেশের ডায়েরিতে পাওয়া যায়।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে এসএনসি-লাভালিনের সাবেক দুই কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে কানাডিয়ান পুলিশ।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর মোট সাতজনকে আসামি করে রাজধানীর বনানী থানায় (মামলা নং-১৯) মামলা দায়ের করে দুদক।
এ মামলায় বিদেশি আসামি তিনজন- ইসমাইল, রমেশ ও কেভিন ওয়ালেস। বাংলাদেশের আসামিরা হচ্ছেন- সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইপিসি’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা।
জানা গেছে, তিন আসামির মধ্যে কেভিন ওয়ালেস কানাডিয়ান, ইসমাইলের পূর্বপুরুষের বাড়ি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে, আর রমেশের ভারতে। দুদকের মামলার বিদেশি এ তিন আসামি বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন।
ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৩