মাঝ-আকাশে জেজু ফ্লাইটের ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি
ল্যান্ডিং গিয়ারের সমস্যায় দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট গন্তব্যে না যেয়ে সিউলে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। একদিন আগে একই উড়োজাহাজ সংস্থার একটি বোয়িং ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে ১৭৯ আরোহী নিহত হয়েছেন।
আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
রোববার মুয়ান বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়া উড়োজাহাজ আর আজকের ফ্লাইটের আকাশযানটি একই মডেলের। দুটিই মার্কিন নির্মাতা বোয়িংয়ের ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ।
গতকালের দুর্ঘটনার ভিডিওতে দেখা গেছে, ল্যান্ডিং গিয়ার ব্যবহার না করেই (এই গিয়ার ব্যবহারে চাকা বের হয়ে আসে) উড়োজাহাজটি রানওয়েতে অবতরণ করে এবং বিমানবন্দরের প্রাচীরের সঙ্গে আঘাত করে ভস্মীভূত হয়।
আজ সোমবার জেজু এয়ারের ফ্লাইট নম্বর ৭সি১০১ সিউলের জিমপো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেজু দ্বীপের উদ্দেশে আনুমানিক সকাল ছয়টা বেজে ৩৭ মিনিটে রওনা হয়।
কিন্তু টেকঅফের অল্প সময় পর ল্যান্ডিং গিয়ারের ত্রুটি চিহ্নিত হলে সকাল সাতটা বেজে ২৫ মিনিতে উড়োজাহাজটি সিউলে ফিরে আসে।
জেজু এয়ারের ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট অফিসের প্রধান সং কিউং-হুন জানান, 'টেকঅফের অল্প সময়য় পর উড়োজাহাজের নিরীক্ষা ব্যবস্থায় ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি থাকার সতর্কতাসূচক সিগনাল দেখানো হয়।'
উড়োজাহাজ সংস্থাটি জানায়, 'সকাল ছয়টা ৫৭ মিনিটে উড়োজাহাজের ক্যাপ্টেন গ্রাউন্ড কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বাড়তি কিছু উদ্যোগ নেওয়ার পর ল্যান্ডিং গিয়ারের ত্রুটি সারানো হয়। তবে উড়োজাহাজের পূর্ণাঙ্গ নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্টরা গন্তব্যে না যেয়ে একে সিউল বিমানবন্দরে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, উড়োজাহাজটির ২১ যাত্রী বিকল্প ফ্লাইটে চড়তে অস্বীকার করেন। তারা জেজু এয়ারের নিরাপত্তা মান নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেন।
জেজু এয়ারের ৪১টি উড়োজাহাজের মধ্যে ৩৯টিই দুর্ঘটনাকবলিত বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের।
সোমবার সিউল জানিয়েছে, দেশটিতে কার্যকর আছে এমন ১০১টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজের পূর্ণাঙ্গ নিরীক্ষা প্রক্রিয়া চালানো হবে। মার্কিন কর্মকর্তারা এতে সহায়তা করবেন। বোয়িং এর কর্মীরাও দুর্ঘটনার তদন্ত ও নিরীক্ষায় অংশ নেবেন।
রোববার ব্যাংকক থেকে মুয়ান বিমানবন্দরে ১৮১ আরোহী সহ আসা জেজু এয়ারের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি ল্যান্ডিং গিয়ার ব্যবহার না করেই অবতরণ করে এবং প্রাচীরে ধাক্কা খায়। নিমিষেই আগুনের লেলিহান শিখায় ভস্মীভূত হয় আকাশযানটি। উড়োজাহাজের পেছনের কিছু অংশ ছাড়া এটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়।
পেছনের অংশে থাকা দুই ক্রু ছাড়া উড়োজাহাজের বাকি সব আরোহী প্রাণ হারিয়েছেন।