ডিসেম্বর মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ২.৬৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সে এসেছে, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রাপ্তির রেকর্ড। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রাপ্তির রেকর্ড ছিল ২০২০ সালের জুলাইয়ে মহামারির সময়। ওই মাসে ২.৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (২০২৪–২৫) প্রথম ছয় মাসে (জুলাই–ডিসেম্বর) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩.৭৮ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা আগের বছরের (২০২৩) তুলনায় ২২ শতাংশ বৃদ্ধি। ডলারের দাম আনুষ্ঠানিকভাবে ৯ শতাংশ বৃদ্ধি এবং অর্থ পাচার কমার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।যেখানে ২০২৩ সালে দুবার মাসিক রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল, ২০২৪-এর জুলাই বাদে বাকি ১১ মাসের প্রতিটিতেই রেমিট্যান্স এসেছিল ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। জুলাইয়ে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের কারণে ইন্টারনেট ও ব্যাংকিং কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় দেশের প্রবাসী আয়ে প্রভাব পড়ে।
হুসনে আরা শিখা বলেন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হুন্ডির চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। অর্থ পাচার হ্রাস পাওয়ার ফলে আগে যে-সব অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো হতো, এখন তা আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে আসছে। এছাড়া, আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে ডলারের দরের ব্যবধান কমে এক টাকার মধ্যে সীমিত হয়েছে, যা ডলারের আনুষ্ঠানিক দর বৃদ্ধি এবং হুন্ডির চাহিদা হ্রাসের কারণে সম্ভব হয়েছে।
'সামগ্রিকভাবে, আমরা রেমিট্যান্স প্রবাহের এ বৃদ্ধি ইতিবাচক হিসেবে দেখছি এবং আগামী বছর আরও ভালো প্রবাহ আশা করছি,' বলেন হুসনে আরা শিখা।বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, রেমিট্যান্স বিনিময় হারের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। ডলারের দর বাড়লে রেমিট্যান্স প্রবাহও বাড়ে। আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডলারের দর ১২০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়। ডিসেম্বর নাগাদ তা বেড়ে ১২৮ টাকা হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে লেনদেন সীমিত করা হয় ১২৩ টাকায়। এটি ডলারের দর অন্তত ১০ টাকা বা ৯ শতাংশ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।