ভবিষ্যতে অধিকার আদায়ে তরুণদের যেন আর প্রাণ দিতে না হয়: আলী রিয়াজ

এদেশের জনগণকে বা তরুণ প্রজন্মকে অধিকার আদায়ে যেন আর কখনো প্রাণ দিতে না হয়, সে কারণে কাঠামোগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটি আদর্শ জায়গা হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বৃহস্পতিবার (৮ মে) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'এমন একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সবার চাওয়া— যেখানে নাগরিক অধিকার সুরক্ষার জন্য একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকবে, একটি জবাদিহিমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থাকবে। একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হন বা যা-ই হন না কেন তিনি যেন ক্ষমতার উর্ধ্বে বা ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত হয়ে না যান।'
আলী রিয়াজ বলেন, 'ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম সেভাবেই পরিবর্তনের ধারা সূচনা করতে হবে। কাঠামোগত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এমন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যেখানে ভবিষ্যত প্রজন্ম বাংলাদেশকে একটি আদর্শ জায়গা বলে বিবেচনা করতে পারে। এদেশের জনগণকে বা তরুণ প্রজন্মকে যেন আর কখনো তার অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণ দিতে না হয়।'
এ সময় সবার ঐকমত্যে ভবিষ্যত বাংলাদেশের একটি পথরেখা তৈরির আশাবাদ ব্যক্ত করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, 'আমরা সবাই একমত হয়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরির চেষ্টা করছি, যেটি ভবিষ্যত বাংলাদেশের পথরেখা নির্দেশ করবে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে কমিশন অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। এছাড়া লক্ষ্য অর্জন করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ও জনগণকে ঐক্যের জায়গায় পৌঁছাতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনায় ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু'র নেতৃত্বে দলটির মহাসচিব ড. আবু ইউসুফ সেলিম এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আব্দুল কাদের, পারভীন নাসের খান ভাসানী এবং আমিনুল ইসলাম সেলিমসহ ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেন।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়।
ইতোমধ্যে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। ভাসানী অনুসারী পরিষদসহ এ পর্যন্ত ২৭ টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে।
Comments