লামা ও বাইশারীর নতুন সড়ক খুলে দিচ্ছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার

দেশের পার্বত্য অঞ্চলে অপার এক সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। এখানকার পর্যটন খাত, কৃষি ও ফলদ চাষাবাদ-উৎপাদনের ক্ষেত্রে নানা নতুন নতুন সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চলে উৎকৃষ্টমানের ড্রাগন, কাজু বাদাম, কমলা-মাল্টা, আনারস, আম, কলাসহ নানা কৃষি ও ফল-ফলাদি উৎপাদন হতে শুরু করেছে। এমনকি এখানে ভালো মানের কফি উৎপাদন শুরু হয়েছে। এরকম আরও নানা কৃষি সম্ভাবনা এখানে জেগে উঠেছে।
সেখান থেকে চিন্তা করলে দুই সড়ক নির্মাণে মাধ্যমে অর্থনীতিতেও একটা বিরাট ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে পাহাড়ের আর্থ-সামাজিক খাতের নানা হিসাব। নতুন নতুন সড়ক মাধ্যমে অবকাঠামো বদলে যাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে এই দুটি সড়কের মাধ্যমে পাল্টে যাবে দুর্গম এলাকার দৃশ্যপথ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছে, চলতি বছর শেষ নাগাদ এর কাজ শেষ হলে খুলে যাবে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। লাঘব হবে দীর্ঘদিনের সীমাহীন দুর্ভোগ আর ভোগান্তি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত কৃষিকাজ করণ ও নায্যমূল্যে দাম পাবে এই অঞ্চলে জনসাধারণ মানুষ। ফলে সহজেই পরিবহণ থেকে শুরু করেন নানা ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবে সাধারণ মানুষ।
লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি এলজিইডি তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় দুটি সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে। লামা-সুয়ালক ও পূর্নবাসন-বাইশারী বাজার পর্যন্ত ৫ হাজার ২৫০ মিটার ও ৪ হাজার ১০০ মিটার এই দুটি সড়কের প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সড়ক দুটি বাস্তবায়ন করছেন মের্সাস মারমা এন্টারপ্রাইজ স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার আবুল কালাম সেন্টু ও মের্সাস মিল্টন ট্রেডার্স স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মো: সুজন।
দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ বলছে, ভাঙাচুরা সড়কে যানজটের ভোগান্তি নিত্যদিনের সঙ্গী এখানকার যাত্রীদের। দ্রুত প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হলে, যাতায়াতের সুব্যবস্থার পাশাপাশি ভাগ্য বদল হবে স্থানীয়দের। প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হলে, যাতায়াতের সুব্যবস্থার পাশাপাশি ভাগ্য বদল হবে স্থানীয়দের। তাছাড়া প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ার পর যানজট এড়িয়ে এই সড়কে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা জানিয়েছে, দুটি সড়কের মিলে প্রায় ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকার প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত একটি সড়কের শতভাগ ও আরেকটি সড়ক ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। লামা-সুয়ালক সড়ক দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে পূর্নবাসন-বাইশারী বাজার পর্যন্ত ৪ হাজার ১০০ মিটার সড়কটি। তবে লামা-সুয়ালক পর্যন্ত ৫ হাজার ২৫০ মিটার সড়ক প্রশস্তকরণে কাজের অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। এই সড়কের পুরোদমে চলছে কার্পেটিং, ড্রেইনসহ বিশাল কর্মযজ্ঞ। দিনরাত প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের নিরলস প্রচেষ্টায় দৃশ্যমান হয়েছে সড়কটির অধিকাংশ সড়ক। এই সড়ক দুটি শেষ হলে বদলে যাবে কৃষকদের ভাগ্যের চাঁকা ও উন্নতি হবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবকাঠামো। তাছাড়া এই সড়ক দিয়ে চলাচল করছেন কয়েক লাখ মানুষ। রাস্তা উন্নতি হওয়াই খুশি দুই উপজেলার বাসিন্দারা।
লামা ক্যাজু পাড়া ও বাইশারী বাসিন্দা নুর আলম ও রহিম চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন এই দুটি সড়ক দিয়ে হাজার মানুষ চলাচল করে থাকেন। খানাখন্দের ভরা কারণে মাঝে মধ্যে দূর্ঘটনার শিকার হত। মুল সড়ক হিসেবে কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এই সড়কটি ব্যবহার করা হত। বর্তমানে সড়কটি প্রশস্ত করাই রাস্তাগুলো বড় হয়ে গেছে। এখন চলাচলে কোন অসুবিধা সম্মুখীন হতে হবে না। এই সড়কে মাধ্যমে অর্থনৈতিক আরো বৃদ্ধি পাবে।
বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তাসাউর জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় পূর্নবাসন- বাইশারি বাজার পর্যন্ত শতভাগ সম্পন্ন ও লামা-সুয়ালক সড়ক প্রশস্ত করণের কাজ ৯৫ শতাংশ হয়েছে। এই সড়কগুলো প্রশস্তকরণ শেষ হলে দুই উপজেলার মানুষ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। যেসব এলাকায় দুর্ভোগে পোহাতে হত সেখানে এই সড়কের মাধ্যমে উপকার হবে। চাষিরা নায্যমূল্যে দাম পাবে আর এলাকা জনসাধারণ মানুষ চলাচলের নিশ্চিত হবে।
Comments