মিরসরাইয়ে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ফারজানা আক্তার কলি (২২) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার ৩ নম্বর জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পরাগলপুর গ্রামের নুর আহম্মদ সওদাগর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ ওমান প্রবাসী ওমর ফারুকের স্ত্রী। খবর পেয়ে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ রাত সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গৃহবধূ ফারজানা আক্তার কলির বিয়ের ৫ বছর পার হলেও কোন সন্তান না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামীর পরিবার নির্যাতন করে আসছিল। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) কলির প্রবাসী স্বামী ওমর ফারুক ওমান থেকে দেশে ফেরার পর তার বাবার বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগও কমিয়ে দেয়। সোমবার রাত ৯টার দিকে কলির শাশুড়ি তার মরদেহ সিএনজি অটোরিকশাযোগে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে কিছুক্ষণ পর তিনি কলির পরনে থাকা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন।
নিহতের মা আমেনা বেগম বলেন, 'আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তার শাশুড়ি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।'
নিহতের ফুফাতো বোন সাবিয়া খাতুন বলেন, 'কলির বিয়ে হয়েছে ৫ বছর। কোন সন্তান না হওয়ায় গত দুই বছর ধরে তাকে নির্যাতন করে আসছিল স্বামীর পরিবার। তাকে মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। কলিকে আমরা ছোটকাল থেকে চিনি, সে এতবছর কিছু করেনি কোনদিনও সে আত্মহত্যা করতে পারে না। স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ সবাই মিলে তাকে হত্যা করেছে।'
এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফাহিম ফেরদৌস বলেন, 'সোমবার রাত ৯টার দিকে ফারজানা আক্তার কলি নামে এক গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় তার শাশুড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ইসিজি করার জন্য তার পরনে থাকা স্বর্ণালঙ্কার খুলতে বললে নিহতের শাশুড়ি সব স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে চলে যান। পরে আমরা জোরারগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিই।'
জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হান্নান আল মামুন বলেন, 'মরদেহের সুরতহালে গলার পেছনে দাগ দেখা যায়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক থাকলেও নিহতের শ্বশুরকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটন করা যাবে।'
Comments