তরুণদের ভাষা বুঝতে প্রবীন রাজনীতিকরা ব্যর্থ হয়েছেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, কেবলমাত্র ভোটের জন্য তরুণরা জীবন দেয়নি। তরুণদের মনন বুঝতে হবে। তরুণদের ভাষা বুঝতে প্রবীন রাজনীতিকরা ব্যর্থ হয়েছেন। তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগকে পুর্নবাসনের পরিকল্পনা করছে। আগে খুনি হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান কামাল খানসহ খুনিদের বিচার করতে হবে। তারপর আলোচনা হবে আওয়ামীলীগ নির্বাচন করতে পারবে কি পারবে না।
সোমবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গায় এক সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অভ্যুত্থানের শক্তি নাগরিক, আহত ও শহীদ পরিবারের সাথে তরুণ নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটির চুয়াডাঙ্গা রাইজিং সমাবেশ হয়েছে।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে সোমবার বিকাল ৪ টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গার আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক। স্থানীয় সংগঠক সাফফাতুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
এ সময় তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা একটি সম্ভাবনাময় জেলা। কিন্তু এখানে কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি। কেন হয়নি আপনারা জানেন। বিগত ১৬ বছর সারাদেশের মানুষের মত এখানকার মানুষও ভোট দিতে পারেনি। চুয়াডাঙ্গা সীমান্তবর্তী একটি জেলা। এই জেলার বিপরীতে ভারতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে আছেন। তিনি মাঝে মধ্যে আমাদেরকে ভয় দেখান, যে তিনি টুপ করে এদেশে ঢুকে পড়বেন। সেটা যাতে না করতে পারে, সেকারনে আপনাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে সজাগ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের সজাগ থাকতে হবে। আওয়ামীলীগের পূণর্বাসনের প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোন বিকল্প নেই। আমরা সার্ভিস ওরিয়েন্টেড বাংলাদেশ চাই।
তিনি আরো বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই আপনাদের সাথে ফ্যাসিবাদী সরকারের অনেকের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল সেই জিনিসগুলো কিন্তু আমাদের জানা রয়েছে, সুতরাং আওয়ামী লীগের বিচার বাদ দিয়ে তাদেরকে পুনর্বাসনের চিন্তা করছেন আপনারা, কিন্তু এই তরুণ প্রজন্মের সাথে বেইমানি করছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি খুনি ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচারের কোন কথাবার্তা আপনারা বলছেন না আপনারা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকবে কি থাকবে না সেটা নিয়ে আলোচনা করছেন কিন্তু আওয়ামী লীগকে কিভাবে নিষিদ্ধ করা যায় এ নিয়ে কোন কথাবার্তা বলছেন না। আপনাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংকের চিন্তা রয়েছে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের মাধ্যমে আপনারা তাদের ভোটব্যাঙ্কের এবং ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করতে চান। আপনার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামোকে দখল করতে চান। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই আমরা তরুণ প্রজন্ম যতদিন রাজপথে আছি আমাদেরকে শেখ হাসিনা কিনতে পারে নাই। আপনারাও আমাদেরকে কিনতে পারবেন না কোন রাজনৈতিক দল আমাদেরকে কিনতে পারবে না। এই তরুণ প্রজন্ম দ্ব্যর্থ কণ্ঠে বলতে চাই আপনারা আমাদেরকে আসনের লোভ দেখাবেন, পার্লামেন্টে কোন সিট দিয়ে আমাদেরকে কিনতে পারবেন না। জাতির প্রতি যে জন আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। আপনারা যারা প্রবীণ রাজনীতিবিদ রয়েছেন আমরা দেখেছি গত ১৬ বছরে অনেক ত্যাগ এবং নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আপনাদের যে ত্যাগ ও অভিজ্ঞতা এবং তরুনদের ভয়হীন মনোবল রয়েছে এই দুটোর সমন্বয়ে ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই, বিদেশ থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সবাইকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার উপরে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
রাইজিং চুয়াডাঙ্গার সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম, মোল্লা এহসান, আশরেফা খাতুন। স্থানীয়দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দামুড়হুদার সংগঠক আ.রহিম, আ. রাকিব, চুয়াডাঙ্গার কাজল, দর্শনার আবিদুর রহমান রিফাত, কুষ্টিয়া জেলার সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ইসরাফিল হোসেন, জীবননগরের পারভেজ প্রমুখ।
Comments