চট্টগ্রামের বাজারে সবজিতেও নেই স্বস্তি, ডিম-মুরগি-মাছের দাম চড়া

এক সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রাম নগরীতে মুরগি, ডিম, মাছের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি চিনি ও ডালের দামও বেড়েছে। তবে কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। অন্যদিকে সবজির বাজারে আলু ও মিষ্টিকুমড়ো ছাড়া স্বস্তি নেই অন্য কোনো পণ্যে। বাজার ভর্তি সামুদ্রিক মাছ হলেও দাম বাড়তি বলছেন ক্রেতারা। শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে নগরীর বিভিন্ন বাজারে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বাজারে মুরগির মধ্যে গত সপ্তাহে সোনালি মুরগির দাম ছিল কেজিপ্রতি ২৯০ থেকে ৩শ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে অন্তত ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি ৬শ থেকে ৬২০ টাকা, পাকিস্তানি কক ৩৫০ টাকা এবং জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬শ থেকে ৭শ টাকায়। অন্যান্য মাংসের মধ্যে গরুর মাংস ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকা, খাসি ও পাঁঠা ছাগলের মাংস ১২শ থেকে ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের দামেই আছে।
বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম ডজনপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকা ও হাঁসের ডিম ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিকেজি খোলা সাদা চিনি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, প্যাকেট চিনি ১২০ টাকা, লালচিনি ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতারা জানালেন, দাম বেড়েছে অন্তত কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। এছাড়া মোটা দানার মসুর ডাল ১শ টাকা, সরু মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা, নেপালি মসুর ১৪০ টাকা, ছোট মুগডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, খেসারি ডাল ১শ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা মসুর ডাল ৫ টাকা, চিকন মসুর ডালের দাম ২০ টাকা বেড়েছে।
অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম খুচরায় স্থিতিশীল আছে। এর মধ্যে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, কাজু বাদাম ১৭শ টাকা, পেস্তা বাদাম ২৭শ টাকা, কাঠ বাদাম ১ হাজার ২২০ টাকা, কিশমিশ ৬শ থেকে ৭শ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১৪শ টাকা, কালো গোলমরিচ ১৩শ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১৬শ টাকা, জিরা ৬শ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
পেঁয়াজের দাম এক সপ্তাহ আগে সেঞ্চুরির ঘরে পৌঁছালেও এখন কমে ৭০-৮০ টাকার মধ্যে এসেছে। নগরীর খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে ভারত থেকে সদ্য আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজ ছোট ৬০ থেকে ৬২ টাকা এবং বড়গুলো ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরায় ছোট পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও বড় পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে স্বস্তি দিচ্ছে শুধু আলু এবং মিষ্টিকুমড়ো। প্রতিকেজি আলু মানভেদে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর মিষ্টিকুমড়োর দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে স্থির হয়ে আছে। অন্যান্য সবজির দাম এখনো চড়া। কাঁকরোল, ঝিঙা, পটল, ঢ্যাঁড়স, শসা, করলা প্রতিকেজি ৯০ থেকে ১শ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বরবটি ৭০-৮০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১শ টাকা, টমেটো ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কচুরমুখী, লাউ, মূলা কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। গাজর ১৪০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা, শালগম ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা প্রতিকেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা আর শাকের মধ্যে কচুশাক ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া শাক ৩০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লালশাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর প্রায় প্রতিটা বাজারে মাছের সরবরাহ প্রচুর, কিন্তু দাম কমেনি। বাজারে লইট্যা ২শ থেকে ২২০ টাকা, ভ্রাম্যমাণ দোকানে ১৮০ টাকা, ফাইস্যা ১৮০ থেকে ২শ টাকা, পোয়া ২৫০ থেকে ৩শ টাকা, শাপলা পাতা মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, কোরাল ৬শ থেকে ৮শ টাকা, রূপচাঁদা ৩৫০ থেকে ৭শ টাকা,খুচরা বাজারে এক-দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার থেকে ২৪শ টাকা, ৫শ-৭শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫শ টাকা, এক কেজির কিছু কম ওজনের ইলিশ ১৮শ-২ হাজার টাকা এবং জাটকা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭শ থেকে ৭৫০ টাকায়। দুই-আড়াই কেজি ওজনের বড় ইলিশ মাছ প্রতিকেজি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪শ থেকে ৪৫০ টাকা, টেংরা ৬শ থেকে ৮শ, পুঁটি ২শ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩শ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২শ থেকে ৩শ টাকা, নাইলোটিকা ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, শিং ৪শ থেকে ৪৫০, কৈ ২শ থেকে ২২০ এবং তেলাপিয়া ও পাঙাস মিলছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকায়।
Comments