মিডফোর্ডে ঘটনাটি কোন বিছিন্ন ঘটনা নয়: চট্টগ্রামে ভিপি নূর

সাবেক ডাকসুর ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেছেন, আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিও দেশে হত্যার রাজত্ব কায়েম করেছেন। ৫ আগষ্টের পর বিএনপি তার নিজ দলের লোকসহ হাজারেরও অধিক লোককে হত্যা করেছে। ক্ষমতায় আসার আগেই দেশে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, লুটপাটের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। গত ১১ জুলাই রাজধানীর মিডফোর্ডে একজন নিরীহ লোককে যুবদল নেতা কর্তৃক পৈশাচিক ভাবে হত্যা করে। বিএনপি'র এ ধরণের আচরণ বন্ধ না করলে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে এ দেশের কিছু সুবিধাবাদী মিডিয়া কর্মী ও ব্যবসায়িক নেতারা চাটুকারিতা করে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান সৃষ্টি করেছে। প্রশাসনে এখনও হাসিনার অনুসারী লোকজন রয়েছে। হাসিনাকে যারা মদদ দিয়েছে প্রশাসনের লোক সহ ব্যবসায়ী ও মিডিয়াকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জুলাই বিপ্লব সহজভাবে সৃষ্টি হয়নি। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কোটা সংস্কারের আন্দোলন জুলাই বিপ্লবে মানুষের অধিকার আন্দোলনে পরিণত হয়। যার কারণে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করতে হয়েছে।
ভিপি নূর গণমানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান। গন-সমাবেশে চট্টগ্রাম ১২ পটিয়া সংসদীয় আসনে গনঅধিকার পরিষদের প্রার্থী ডা. এমদাদুল হাসানকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তাকে আগামীর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করেন।
শনিবার (১২ জুলাই) চট্টগ্রামের পটিয়া আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গণঅধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যোগে জুলাই বিপ্লব গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূর উপরোক্ত কথা গুলো বলেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক ডা. এমদাদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এডভোকেট আরিফুল হক তায়েফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন গনঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ফারুক হাসান।
গনঅধিকার পরিষদের এ নীতিনির্ধারক আরও বলেন, যুবদলের কর্মী পরিচয়ে ঢাকার মিটফোর্ডে যেভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় দিন দুপুরে প্রকাশ্যে দিবালোকে হত্যাযঞ্জ চালিয়েছে। যদিও বিএনপি সাংগঠনিক ভাবে বলে দিয়েছে এ সমস্ত অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জিরোটলারেন্সনীতি অবলম্বন করার। কিন্তু বিএনপি নেতাকর্মীদের বেপরোয়া কার্মকান্ড সারাদেশের কোথাও থামছেনা।
মিটফোর্ডের ঘটনাটি একটি বিছিন্ন ঘটনা নয় উল্লেখ করে নুর বলেন, ৫ আগষ্টের পর থেকেই গত ১১ মাসে সারা দেশে অন্তত এরকম ১১ হাজার ঘটনা ঘটেছে। মিটফোর্ডের ঘটনাটি মিডিয়ার কারনে সারাদেশের মানুষের নজরে এসেছে। মানুষ প্রতিবাদ করছে এ বিষয়টি নিয়ে, আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশে এ রকম ঘটনা আরো বিভিন্ন পর্যায়ে ঘটছে। কিন্তু সেগুলোর ব্যাপারে কার্যকর প্রদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন নুর।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নুরুল হক নুর বলেন, আমরা আগামীর সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচনের দাবি করছি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত পোষণ করেছেন। সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচনের মাধ্যমে যে দল সারাদেশ মিলিয়ে যত শতাংশ ভোট পাবে তাদের তত সংখ্যক প্রতিনিধি সংসদে থাকবে। এতে করে সকল দলের প্রতিনিধিত্ব সংসদে থাকবে। সে লক্ষ্যে আগামীর নির্বাচন গনঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে পটিয়া থেকে ডা. এমদাদুল হাসানকে ট্রাক প্রতিকে ভোট দিয়ে পটিয়ার গণমানুষের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে পাঠানোর জন্য আহবায়ক জানান।
গণসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে দলটির মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যেভাবে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, লুটপাট করেছে বিপ্লব পরবর্তী আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে যদি কেউ ফ্যাসিবাদের রাজনীতি কায়েম করতে চাই তাহলে তাদের পরিনতি আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়ঙ্কর হবে। আওয়ামী লীগের মতো স্বৈরাচার এই বাংলাদেশের মাটিতে আগামীতে কোন দল হতে পারবে না। সেই জগন্য স্বৈরাচারের সামনে এ দেশের রাজনৈতিক দল, গণমানুষের নেতা নুরুল হক নুর ও তার দলের নেতাকর্মীরা বিন্দুমাত্র ভয় করেনি। তাই যদি কেউ মনে করে থাকেন পাথর দিয়ে, বুলেট দিয়ে এ দেশের তরুণদের আটকাবেন তাহলে বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। আসুন ঐ পুরাতন বন্দোবস্তকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে তারুণ্যের যে উচ্ছাস আর উদ্দীপনা, তারুণ্যের যে স্পিড সবাই গণঅধিকার পরিষদের সাথে থাকি।
গনসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জিওপির উচ্চতর পরিষদ সদস্য আব্দুস জাহের, আবু হানিফ, জসিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার ডলি, সহ পার্বত্য বিষয়ক সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আকাশ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান হোসেন, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি প্লাবন আহমদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আসাদুজ্জামান সম্রাট, দপ্তর সম্পাদক আবু তোহা, চট্টগ্রাম মহানগর গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক ইউছুপ, গণ অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সদস্য সচিব হাসান তারেক, পেশাজীবি অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম, পেশাজীবি অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলামা মুনির ইসলাম, যুব অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি শাহেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কাউছার, যুব অধিকার পরিষদ দক্ষিণ জেলার সভাপতি দিদার, ছাত্র অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি আরজু, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি হাবিব মেহেদী, সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি, উত্তর জেলা সভাপতি তানজিম হাসান,শ্রমিক অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।
Comments