সারাদেশের প্রেসক্লাবগুলো এক ছাতার নিচে আনার পরিকল্পনা চলছে

চাঁদপুরের সর্বস্তরের সাংবাদিকদের নিয়ে সাংবাদিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সাংবাদিক সমাবেশ হয়। এতে জেলা ও উপজেলার শতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহন করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের নবনির্বাচিত সভাপতি রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ, সাধারণ সম্পাদক সফিক শাহীন, চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির মহাপরিচালক কাদের পলাশ এবং বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ও সাধারণ সম্পাদক শাওন পাটোয়ারীকে প্রেসক্লাবের পক্ষে সম্মাননা স্মারক তুলেদেন অতিথিবৃন্দ।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও আয়োজিত সাংবাদিক সমাবেশ ছিল লক্ষ্যণীয়। সাংবাদিক সমাবেশে যোগ দিতে এদিন সকাল থেকেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাংবাদিকরা স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে ভিড় জমান। তারা প্রেসক্লাব আয়োজিত দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজে অংশগ্রহণ করেন। আর আগত এসব সাংবাদিকদের স্বাগত জানান প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিম বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ। পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই ছিল উৎসবের আমেজ। বিপুলসংখ্যক সাংবাদিকের উপস্থিতিতে সাংবাদিক সমাবেশ রূপ নেয় মিলন মেলায়।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিম বাদশার সভাপতিত্বে সাংবাদিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া। এছাড়া প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া বলেন, আমরা জেনে শুনেই এই পেশায় এসেছি, যা বিষ পান করার মতই। রাজনৈতিক ভাবে আমাদের সুযোগ দিলে আমরা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে পারবো।
পুলিশের নিরাপত্তা আছে কিন্তু সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নেই। সারা পৃথিবীতে সাংবাদিকতা পেশা ঝুকিপূর্ণ কিন্তু আমাদের দেশে একটু বেশি ঝুকিপূর্ণ। আপনারা অনেক প্রতিশ্রুতি আমাদের কাছে চেয়েছেন। আমরা চাই সারাদেশের প্রেসক্লাবগুলো এক ছাতার নিচে আনার পরিকল্পনা চলছে। যেখানে একটি প্রেসক্লাব আছে সেগুলো আগে আনা হবে। আর সেখানে বেশি আছে সেগুলো পরে চিন্তা করা হবে। প্রেসক্লাব বেশি থাকলে আমাদেরকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সাংবাদিকতাকে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আপনারা এমন কোন প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন না, যারা অবস্থান ধরে রাখতে পারে না।সাংবাদিকতার পাশাপাশি আপনাদের কিছু করতে হবে। তা না হলে তাঁবেদারি করে চলতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাব তার আয় দিয়ে চলে। কোনদিন সরকারের অনুদান ছিল না। যার কারণে আপনাদের কোন বরাদ্দ দেয়ার সুযোগ নেই। আমি আবারো বলতে চাই, সাংবাদিকতা মানে মানুষের সেবা করা। এটি একটি মহান পেশা। আমাদের মধ্যে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব নেই, এটি চাঁদপুর থেকে শুরু হোক। এই জাতিকে অবক্ষয় থেকে রক্ষার জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখতে হবে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, এই আয়োজনটি সাংবাদিকদের জন্য মিলন মেলা। চাঁদপুর প্রেসক্লাব একটি ব্যতিক্রম প্রেসক্লাব। মানুষ ফেসবুকে ঢালাওভাবে অনেক কিছু দিয়ে থাকে কিন্তু চাঁদপুরের সাংবাদিকরা সঠিক তথ্য জেনে দিচ্ছেন, যা সাংবাদিকরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন। প্রশিক্ষণের কথা বার বার আসছে, আসলেই প্রশিক্ষণ দরকার। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বড় ধরনের কোন ঘটনা হলে এটা আপনাদের সতর্কতার সাথে দিতে হয়। সাংবাদিকরা কঠিক কাজকে খুব সহজ করে করেন, তার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। মূল সাংবাদিকতা বলতে যা বুজায়, আপনারা তা করছেন। আশা করি আপনাদের মধ্য থেকে খুব ভালো অবস্থানে থেকে পরিচিত পাবেন।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এরশাদ উদ্দিন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিমুল্লাহ সেলিম, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য অ্যাড. শাহাজাহান মিয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. জহির উদ্দিন বাবর, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন (মেহেদী হাসান), সুজন জেলা শেখার সভাপতি অধ্যাপক মোশারেফ হোসেন, জেলা তথ্য অফিসার তপন বেপারী, ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের নবনির্বাচিত সভাপতি রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ, কলামিস্ট ফোরামের সদস্য সচিব মীর আব্দুল আলিম, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জালাল চৌধুরী, বিএম হান্নান, ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, জি এম শাহীন, মির্জা জাকির, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, রিয়াদ ফেরদৌস, আল ইমরান শোভন, মাহবুবুর রহমান সুমন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র কার্যকরী সদস্য মুনির চৌধুরী, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি আলম পলাশ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল রুবেল, কার্যকরী সদস্য ফারুক আহম্মদ, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ও সাধারণ সম্পাদক শাওন পাটোয়ারী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লিটন ভূইয়া, হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান মাহমুদ, শাহরাস্তি প্রেসক্লাব সভাপতি কাজল,মতলব উত্তর প্রেসক্লাব সভাপতি ডালিম, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি মহাসীন প্রমূখ।
Comments