চরের মাটি চুরির সময় ৬টি ট্রলারসহ ১৪ শ্রমিক আটক

বরিশালের বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার ইট ভাটার জন্য সন্ধ্যা নদীর চর থেকে মাটি কাটার অভিযোগে ১৪ জন শ্রমিককে আটক করেছে পুলিশ। এসময় জব্দ করা হয়েছে মাটি ভর্তি ছয়টি ট্রলার।
সোমবার সকালে উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের দত্তপাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আটক শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
কারাগারে যাওয়া শ্রমিকরা হলেন- আল-আমিন খান (২৬), বিল্লাল হোসেন (৩৮), মো. নুরুজ্জামান (২৬), আব্দুল হাই (২৮), ফরিদ হোসেন (৪৫), আ. মজিদ (৪০). ইউসুফ আলী (২৮), মো. শরিফুল ইসলাম (৩০), মাসুম বিল্লাহ্ গাজী (২২), হযরত বিল্লাহ (৩৭), নুরুল হক (৩১), ইসরাফিল খান (৪০), ইশার আলী (৩৮) ও ইসমাইল গাজী (৩৮)।
বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোস্তফা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আটক ১৪ শ্রমিকের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে। চরের মাটি কাটার সাথে অন্য কেউ জড়িত থাকলে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি জানান, সোমবার সকালে উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের দত্তপাড়া এলাকার সন্ধ্যা নদীর চরের মাটি কেটে নিচ্ছিলেন ইটভাটার শ্রমিকরা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে মাটি ভর্তি ছয়টি স্টিলবডি ট্রলারসহ ১৪ শ্রমিককে আটক করা হয়।
জানা গেছে, আটককৃতরা সবাই বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মনকাঠি গ্রামের মেসার্স শুভ এন্টারপ্রাইজ নামক ইট ভাটার শ্রমিক। ওই ইট ভাটার মালিক বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল ঘরামী। তার নির্দেশেই অবৈধভাবে ইটভাটার জন্য চরের জন্য মাটি টাকা হচ্ছিল।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ঘরামির ছেলে এবং ইটভাটার পরিচালক সৌরভ ঘরামী দাবি করেন, ভাটার জন্য নদীর চরের মাটি নয়, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির মাটি ক্রয় করেছেন তারা। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে।
এদিকে সন্ধ্যা নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের অভিযোগ, উপজেলার ইটভাটাগুলোর ইট তৈরির জন্য নদীর তীরে জেগে ওঠা চর ও ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়ায় নদীর ভাঙন তীব্র হচ্ছে। ভাঙনে নদী তীরের শত শত পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে। আর ভাটার মালিক ও মাটি বিক্রেতারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছে।
তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বছরের পর বছর সন্ধ্যা নদীর বিভিন্ন এলাকার চর ও ফসলি জমির মাটি কেটে অবৈধ ইট ভাটায় বিক্রি করছে। অনেক ভাটা মালিক ভেক্যু ও শ্রমিক দিয়ে চর ও ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে। ভাটাগুলোতে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগও রয়েছে।
Comments