লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৩% বেশি আয় করেছে মোংলা বন্দর

২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা তার ইতিহাসে সর্বোচ্চ নীট মুনাফা অর্জন করেছে। এ সময়ে বন্দরটির নীট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকার তুলনায় ২০৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেশি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মোংলা বন্দরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) কাজী আবেদ হোসেন। তিনি বলেন, "সরকারি নির্দেশনা, সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং কর্মীদের একাগ্রতায় বন্দর কার্যক্রমে গতি এসেছে। ফলে সব সূচকে লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে।"
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এই অর্থবছরে বন্দরের রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি। একই সময়ে ৮৩০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ মোংলা বন্দরে এসেছে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০০টি। এছাড়া কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১০৪ লাখ ১২ হাজার মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউজ (২০ ফুট সমমানের ইউনিট), যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টিইইউজ। এছাড়াও ১১ হাজার ৫৭৯ ইউনিট রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি হয়েছে মোংলা বন্দর দিয়ে।
বর্তমানে মোংলা বন্দরের বার্ষিক সক্ষমতা হলো ১,৫০০টি জাহাজ হ্যান্ডলিং, ১.৫ কোটি মেট্রিক টন কার্গো, ১ লাখ টিইইউজ কনটেইনার এবং ২০ হাজার ইউনিট গাড়ি হ্যান্ডলিং। এই সক্ষমতা আরও বাড়াতে বন্দরে চারটি বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পশুর চ্যানেলে ড্রেজিং, সহায়ক জলযান সংগ্রহ, অসম্পূর্ণ দুটি জেটি নির্মাণ এবং সার্বিক আধুনিকায়ন। সম্প্রতি পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল ব্যবস্থাপনার একটি আন্তর্জাতিকমানের প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে।
কাজী আবেদ হোসেন বলেন, "পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত তৈরি হয়েছে। মোংলা বন্দরের গুরুত্ব বহুগুণ বেড়েছে। আমরা সেই সম্ভাবনার সঠিক ব্যবহার করতে চাই।"
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (বোর্ড) কালাচাঁদ সিংহ, প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ মোস্তফা কামাল, প্রধান হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার রাসেল আহমেদ খাঁন, প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কমান্ডার এস.এম. আবজালুল ইসলাম, উপ-পরিচালক (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মোঃ মাকরুজ্জামান এবং উপ-প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান।
Comments