বিক্ষোভে উত্তাল নেদারল্যান্ডস, ব্যাপক সহিংসতা

নেদারল্যান্ডস অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল। দেশটির দ্য হেগে হওয়া এই বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সহিংস সংঘর্ষ হয়েছে। টিয়ারগ্যাস ও পানিকামান ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও সহিংসতার জেরে অন্তত ৩০ জন আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত হয়েছেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শনিবার টিয়ারগ্যাস ও পানিকামান ব্যবহার করেছে। সহিংসতার দায়ে অন্তত ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ও বোতলও নিক্ষেপ করেছিল।
ডাচ সংবাদ সংস্থা এএনপি জানিয়েছে, প্রায় দেড় হাজার বিক্ষোভকারী শহরের একটি মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কোফ ঘটনাটিকে "অগ্রহণযোগ্য" আখ্যা দিয়ে বলেন, "নির্লজ্জ সহিংসতার এমন দৃশ্য একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না।"
ডানপন্থি নেতা গির্ট উইল্ডার্স গত নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন এবং আগামী ২৯ অক্টোবরের ভোটের আগেও জরিপে এগিয়ে আছেন। তাকে এই বিক্ষোভে বক্তব্য দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তিনি যাননি। বরং তিনি নিজেও পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে "পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য" বলে নিন্দা করেন এবং বলেন, এটি "মূর্খদের কাজ।"
বিক্ষোভটি আয়োজন করেছিলেন এক ডানপন্থি কর্মী। তিনি অভিবাসননীতি কঠোর করার এবং আশ্রয়প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। তবে বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী নিরাপত্তা বাহিনীর মুখোমুখি হওয়ার পর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকে ডাচ পতাকা ও উগ্র-ডানপন্থি সংগঠনের পতাকা হাতে রেখছিলেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা এদিকে বাম দলের প্রধান কার্যালয়ের জানালা ভাঙচুর করে। ডি৬৬ দলের নেতা রব জেটেন বলেন, তাদের কার্যালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, "রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে দূরে থাকুন। যদি মনে করেন ভয় দেখাতে পারবেন, ভুল করছেন। আমরা কখনোই উগ্র সহিংসতাকারীদের হাতে আমাদের দেশ ছেড়ে দেব না।"
দলটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় কার্যালয়ের ভেতরে কেউ ছিলেন না।
প্রসঙ্গত, উইল্ডার্স তার কট্টর-ডানপন্থি পিভিভি দলকে শাসক জোট থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর গত জুনে নেদারল্যান্ডস সরকার ভেঙে পড়ে। অভিবাসন ইস্যুতেই এ বিরোধ সৃষ্টি হয়। উইল্ডার্স অতিরিক্ত ১০টি আশ্রয়বিরোধী ব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন— যার মধ্যে আশ্রয়ের আবেদন স্থগিত রাখা, নতুন রিসেপশন সেন্টার তৈরি বন্ধ করা এবং পরিবার পুনর্মিলন সীমিত করাও ছিল।
Comments