রেকর্ড বাজেট সহায়তা ঋণ, বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে ৭৪ বিলিয়ন ডলার

২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪.৩৪ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। এই ঋণ বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বড়ো ভূমিকা রেখেছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে নেয়া রেকর্ড ৩.৪১ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা।
গত পাঁচ বছরে দেশে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই ঋণের পরিমাণ ছিল ৫০.৮৮ বিলিয়ন ডলার।
তথ্যসংক্ষেপ:
• আর্থিক বছর ২০২৪-২৫ এ ঋণ বিতরণ: ৮.১১ বিলিয়ন ডলার
• ঋণ পরিশোধ: ২.৬ বিলিয়ন ডলার
• ৫ বছরে ঋণ বেড়েছে: ৪৬ শতাংশ
• বৈদেশিক সহায়তা পাইপলাইনে: ৪২.৬১ বিলিয়ন ডলার
• ঋণ পরিষেবার খরচ বাড়বে: ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত
• আইএমএফ এর ঋণ এই পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত নয়
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ERD) থেকে জানানো হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এমআরটি লাইন-৬ (ঢাকা মেট্রো রেল), পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, কর্ণফুলী টানেল এবং হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালসহ বেশ কয়েকটি বৃহৎ প্রকল্পের কাজ শেষ বা প্রায় শেষ হওয়ায় ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, এ ঋণ বৃদ্ধির বড় অংশই এসেছে বাজেট সহায়তা থেকে, যা প্রকল্প-ভিত্তিক ঋণের চেয়ে দ্রুত ছাড় হয়েছে এবং অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করেছে।
গত রোববার প্রকাশিত ইআরডি'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তা বাবদ ৮.১১ বিলিয়ন ডলার ছাড় করা হয়েছে এবং একই সময়ে সরকার ২.৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করেছে। এর ভিত্তিতে মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ড. মাসরুর রিয়াজ বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য নতুন বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সংযমী ছিল। তবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও পেমেন্ট ব্যালেন্স সামাল দিতে তারা বিশ্বব্যাংক, এডিবি এবং আইএমএফ থেকে রেকর্ড বাজেট সহায়তা নিয়েছে, যদিও আইএমএফ-এর ঋণ ইআরডি এর হিসাবভুক্ত নয়।"
তিনি সতর্ক করে বলেন, "ঋণের পরিমাণ যেমন বাড়ছে, তেমনি পরিশোধের চাহিদাও বাড়ছে। ঋণ পরিষেবা খরচ ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এজন্য ভবিষ্যতে আরও সচেতন হতে হবে। কঠোর শর্তযুক্ত বা দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পে ঋণ না নিয়ে দ্রুত ও পরিমাপযোগ্য ফল পাওয়া যায় – এমন প্রকল্পে ঋণ গ্রহণ সীমাবদ্ধ রাখা উচিত।"
পাইপলাইনে রয়েছে ৪২.৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ
ইআরডি'র প্রাথমিক হিসাবে দেখা গেছে, ২০২৫ অর্থবছরের শেষে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে পাইপলাইনে ছিল ৪২.৬০৫ বিলিয়ন ডলার। তুলনামূলক, ২০২৪ অর্থবছর শেষে এই পরিমাণ সামান্য বেশি ছিল। যার পরিমাণ ছিল ৪২.৮৫০ বিলিয়ন ডলার।
Comments