মেট্রোরেল কর্মীরা কর্মবিরতিতে: বিনাভাড়ায় চলাচলের সুযোগ যাত্রীদের

এমআরটি পুলিশের হাতে মেট্রোরেলের ৪ কর্মী লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। জনসাধারণের ভোগান্তি বিবেচনায় মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে কর্মবিরতির ফলে মেট্রোরেল স্টেশনে নতুন টিকিট বা এমআরটি পাস দেয়া হচ্ছে না। যাদের টিকিট নেই, তারা টিকিট ছাড়াই ফ্রিতে গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারছেন।
জানা গেছে, রোববার (১৬ মার্চ) বিকেলে দুজন মহিলা কোনোপ্রকার পরিচয়পত্র প্রদর্শন না করেই সিভিল ড্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে এসে ইএফও অফিসের পাশে থাকা সুইং গেইট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। ইউনিফর্ম পরিহিত না থাকায় তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদের সেখান থেকে পিজি গেইট ব্যতীত সুইং গেইট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। তবে সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান।
পরবর্তীতে একইভাবে আরও দুইজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেইট ব্যবহার করে সুইং গেইট না লাগিয়ে চলে যান। পরে কারণ জানতে চাইলে তারা আগের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএ- এর সঙ্গে ইএফওতে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তারা ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএ-এর কাঁধে বন্ধুক দিয়ে আঘাত করে এবং কর্মরত আরেকজন টিএমও এর শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করে। ওই ঘটনার জেরে ৪ কর্মীর ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই কর্মবিরতির ঘোষণা দেন ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সেই সঙ্গে দাবি আদায়ে প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
মেট্রোরেলের কর্মীদের দাবিগুলো হলো-
১. আগামী এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা ওই পুলিশ সদস্যকে (এস আই মাসুদ) স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব পুলিশ সদস্যকে (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত) শাস্তি প্রদান করতে হবে। এছাড়াও তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
২. মেট্রোরেল, মেট্রো স্টাফ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে হবে।
৩. এমআরটি পুলিশকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
৪. স্টেশনে দায়িত্বরত সিআরএ টিএমও, স্টেশন কন্ট্রোলারসহ অন্য সব কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. অফিসিয়াল পরিচয়পত্র ও অনুমতি ব্যতীত কোনো ব্যক্তি যেন স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে এবং আহত কর্মীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
Comments