উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ মাস ধরে চালক না থাকায় সরকারী অ্যাম্বুলেন্স সেবা বঞ্চিত

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ৬ মাস ধরে নেই অ্যাম্বুলেন্স চালক। অথচ সরকারি একটি অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে ধূলায় ঝাপসা হয়ে আছে। জরুরি চিকিৎসা বা রেফার্ডকৃত রোগী পরিবহনের জন্য সেই গাড়িটি কোনো কাজেই আসছে না, শুধু একজন চালকের অভাবে। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীর স্বজনদের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবার, যা দিনে দিনে রীতিমতো বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ,বরিশাল শহরের হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতে এখন পনেরো'শ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে, যেখানে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকলে তা হতো নামমাত্র ৬০০টাকা ফি-তে। সবচেয়ে বিপাকে পড়ছেন মধ্যবিত্ত ও গরিব রোগীরা। অনেক সময় উপজেলা হাসপাতালে আসার পর ডাক্তার রেফার্ড দিলেও দরিদ্র রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়।
এক রোগীর স্বজন বলেন, আমার বোনের সিজার করতে হবে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বরিশাল রেফার্ড করে। কিন্তু হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক নেই শুনে আমাদের হাতে সময় না থাকায় পাশের একটি বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ডেকে দেড় হাজার টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, সরকার যেখানে প্রতিটি উপজেলায় অ্যাম্বুলেন্স দিচ্ছে, সেখানে একটি চালক রাখার মতো সামর্থ্য কি নেই স্বাস্থ্য বিভাগের?
হাসপাতালের একজন সিনিয়র নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গাড়ি আছে, কিন্তু চালক নেই, এটা শুধু বিব্রতকর না, ভয়াবহ। অনেক সময় রাতবিরাতে রোগী আসলে আমাদের কাছেই জানতে চায়, অ্যাম্বুলেন্স? আমরা বলি, 'আছে, কিন্তু চালক নেই। মানুষ ভাবে আমরা মিথ্যা বলছি।
জানা গেছে, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আ্যাম্বুলেন্স চালক কাজী আব্দুর রহমানকে প্রশাসনিক কারনে বদলী ( স্ট্যান্ডরিলিজ) করা হয়। সেই থেকে এ পদটি শুণ্য রয়েছে। এদিকে অর্ধ বছর ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় এবং এর পেছনে কোনো স্থায়ী সমাধান না আসায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফকরুল ইসলাম মৃধা বলেন, প্রতিমাসে অ্যাম্বুলেন্স চালক চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিচ্ছি। কিন্তু পদায়নের কোন উদ্যোগ নেই। অস্থায়ী চালক নিয়োগের বিষয়েও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। ফলে নিরুপায় হয়ে চালকের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছি।
বরিশালের সিভিল সার্জন ডাঃ এস.এম. মনজুর-এ-এলাহী বলেন, চালক নিয়োগে এরই মধ্যে পরীক্ষা ও বাছাই চলমান রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য শূণ্য পদগুলো নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি চলতি মাসেই এ সমস্যার সমাধান হবে।
Comments