বরিশালে জাপা অফিসে হামলার বিচার দাবীতে সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন

বরিশালে জাতীয় পার্টির জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে হামলার পর সেখানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ভবনটি তালাবদ্ধ না থাকলেও বাইরে থেকে বন্ধ ছিলো। ভিতরে সকল আসবাবপত্র ভাংচুর ও তছনছ অবস্থায় দেখা গেছে। গতকাল রাতে সাড়ে ৮ টার দিকে জাতীয় পার্টির অফিসে ভাংচুর চালানো হয়।
এই ঘটনায় আজ রোববার দুপুর ২টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি। সংবাদ সম্মেলনে মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, তারা কখনো আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন না। গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা তাদের উপর এবং তাদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। তারা এই হামলার ঘটনা বিচার দাবী করেন।
এদিকে গতকাল বিকেলে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ এনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ ২০০/২৫০ জনক অজ্ঞাত আসামি করে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদের বরিশাল মহানগর কমিটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিকুল ইসলাম সাগর।
আজ রোববার বিকেলে বরিশাল নগরীর সদর রোডে বিক্ষোভ সমাবেশ করে দলটি। এ সময় তারা জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানান। পাশাপাশি গণঅধিকার পরিষদের নেতা কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে দ্রুত জিএম কাদের সহ জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, শনিবার জাতীয় পার্টির একটি বিক্ষোভ মিছিলে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর মো. শফিকুল ইসলাম সাগর বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম সাগর বলেন, শনিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে ছাত্র অধিকার পরিষদ হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছিল। বিকেলে ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ নগরীর ফকিরবাড়ি রোডে চা পান করছিলেন। এ সময় জাতীয় পার্টি জেলা ও মহানগর কার্যালয় থেকে বিভিন্ন নেতাকর্মী একটি মিছিল বের করে। মিছিলে প্রধান উপদেষ্টাসহ গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের কটূক্তিমূলক এবং সরকারের সমালোচনা করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
তিনি জানান, তখন তাদের পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সরকারবিরোধী স্লোগান না দিতে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে বেআইনি জনতাবদ্ধে রামদা, দা, চাপাতি, পিস্তল, লোহার রড, বাঁশ, ইট নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালায়।
এতে বরিশাল জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি এইচএম শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচএম হাসান, মহানগর গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন তালুকদার ফয়সাল, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা মিরাজুল ইসলাম, মহানগর গণঅধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ ফরাজী, সদর উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি কে.এম মাইনুলসহ গণঅধিকার পরিষদের আরো ১৫-২০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। এছাড়াও আরো অনেকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশের সহায়তায় আহতদের চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
Comments