লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় বিএনপির ১৬ নেতা বহিষ্কার

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে খাসেরহাট এলাকায় বিএনপির দু-পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপির কর্মী সাইজ উদ্দিন নিহতের ঘটনার তিন দিন পর রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে সাইজ উদ্দিন হত্যা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৬ নেতাকে বহিষ্কার করেছে দলটি।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন ভূইঁয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এরআগে বুধবার রাত ১২টার দিকে নিহতের ভাই হানিফ দেওয়ান বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। তবে মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান অভিযুক্ত শামীম গাজী, ২ নম্বর চরবংশী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মানিক আহাম্মদ তারেকসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৬ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. সালেহ আহম্মদ ও সদস্যসচিব শফিকুর রহমান ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চরবংশীতে অনাকাঙ্গিত ঘটনায় সাইজের উদ্দিনের মৃত্যু ও বাড়িঘর ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের ১৬ নেতাকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক মো. সালেহ আহম্মদ জানান, বুধবার রাতে বিএনপিসহ সকল সহযোগী সংগঠনের এক যৌথ সভার বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে রায়পুর উপজেলার ২ নম্বর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজ ও উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব শামীম গাজী গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার মাছঘাট, মেঘনার চর, কাঁচাবাজার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে গত সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একাধিকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ সময় স্পেন প্রবাসী বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন নিহত হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন।
এর জেরে অন্তত বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। লুট করা হয় ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র। তবে এই হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার জন্য শামীম গাজি ও ফারুক কবিরাজের সমর্থকেরা একে অপরকে দায়ী করছেন।
Comments