একটা মহল নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, রুখে দাঁড়াতে হবে: মির্জা ফখরুল
গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার নিয়ে একটা মহল নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, 'আগামীকাল ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার রায় হবে। এই নিয়ে সারাদেশে একটা অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক বিরাজ করছে। একটা মহল এটা নিয়ে বাংলাদেশে আবার নৈরাজ্য সৃষ্টি করার জন্য পাঁয়তারা করছে। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সুযোগ আমরা পেয়েছি সেই সুযোগ যেন আমরা নষ্ট না করি। গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে যেন আমরা আরও সহজ করে তুলি।'
রেববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এই দেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি এই দেশকে, রাষ্ট্রকে সত্যিকার অর্থেই কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। সেটা তিনি দেখে যেতে পারেননি। স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মধ্যে তিনি সেই নেতা দেখতে পেয়েছিলেন—যে নেতা হয়তো এই দেশের ভাগ্যে পরিবর্তন আনতে পারে।'
তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'বাংলাদেশের রাজনীতি একটা বিভ্রান্ত অবস্থার মধ্যে চলে যাচ্ছে। রাজনীতিতে এমন এমন জিনিস ঢুকছে— যেটা বাংলাদেশের মানুষ চিন্তাই করতে পারে না। দুর্ভাগ্যক্রমে বর্তমান সময়টা অত্যন্ত জটিল সংকটে উপনীত হয়েছে। অনেক আশা, আকাঙ্ক্ষা, ভরসা নিয়ে আমরা ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে, মিথ্যা মামলা হয়েছে, নিহত হয়েছে, শহীদ হয়েছে। অবশেষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা এই দেশ থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।'
মির্জা ফখরুল বলেন, 'মানুষের আকাঙ্ক্ষা, চাওয়াটা কিন্তু আমরা সঠিকভাবে ধরতে পারছি না। অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সকলের সমর্থনে এসেছে। তারা চেষ্টা করেছে রাজনৈতিক কাঠামোকে একটি জায়গায় নিয়ে আসার। সেটার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সমঞ্জস্য আছে কি না সেটা কিন্তু এখনো বলার সময় আসেনি। আমরা বারবার বলেছি—নির্বাচনই হচ্ছে একমাত্র পথ, যা দিয়ে আমরা গণতন্ত্রে যেতে পারব এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সেখানে প্রতিফলিত করতে পারব।'
তিনি বলেন, 'অনেক বিভ্রান্তি, হতাশা এবং অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের এখন একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখানে কিছু গোষ্ঠী, কিছু মহল পরিকল্পিতভাবে দেশে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে চায় এবং তারা বিভিন্ন রকম দাবি তুলে নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়। এই দেশের মানুষের এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে একটি নির্বাচিত সরকার—যার পেছনে জনগণ থাকবে।'
সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, 'কালবিলম্ব না করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিন।'
Comments