ইডেন মহিলা কলেজে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ

ইডেন মহিলা কলেজে অভ্যন্তরীণ,পাবলিক এবং বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই একটি স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে বারবার একটি 'সুষ্ঠু নীতিমালা' প্রণয়নের দাবি জানানো হলেও তা এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, বিগত রাজনৈতিক সরকারের সময়ের অধ্যক্ষরা তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং অনুগত শিক্ষকমণ্ডলী ও অফিস স্টাফদের সহায়তায় সরকারি পরিপত্র উপেক্ষা করে নিজেদের ইচ্ছামতো পরীক্ষা পরিচালনা করেছেন। ফলে এসব পরীক্ষার পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছিল না এবং সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যরাও কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নে ব্যর্থ হয়েছেন।
২০২৫ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে কলেজ পরিচালনায় পরিবর্তন এলেও দেখা যাচ্ছে একাডেমিক কাউন্সিলকে পাশ কাটিয়ে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে,যা শিক্ষক সমাজের মধ্যে হতাশা ও অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। এ ক্ষেত্রে অধ্যক্ষকেই অভিযোগ সমূহের কেন্দ্রে রাখছেন শিক্ষকরা।
আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও ব্যাপক হারে উঠছে। বলা হচ্ছে,একদিনের নিয়োগ পরীক্ষায় কমিটি গঠন,ভিজিল্যান্স দায়িত্ব বণ্টন এবং সম্মানী বিতরণে সরকারি নির্দেশনা না মেনে একক সিদ্ধান্তে সব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বিশেষভাবে অভিযোগ রয়েছে,সম্মানী বণ্টনে কোনো নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করা হচ্ছে না। যেখানে একজন কক্ষ পরিদর্শক দেড় ঘণ্টার পরীক্ষায় ১৬০০-১৮০০ টাকা পান,সেখানে কলেজের হেড ক্লার্ক ও হিসাবরক্ষক এক্ষেত্রে ১০-১২ গুণ বেশি অর্থ নিচ্ছেন,যা লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য,ঢাকার আশেপাশের অন্যান্য সরকারি কলেজে নিয়োগ পরীক্ষা পরিচালনায় অভিন্ন নীতিমালা অনুসরণ করা হলেও শুধু ইডেন মহিলা কলেজে তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
সম্প্রতি অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষার সম্মানী বণ্টন নীতিতে একতরফাভাবে পরিবর্তন আনা হয়েছে একাডেমিক কাউন্সিল বা শিক্ষক পরিষদের কোনো অনুমোদন ছাড়াই।
এই ধরনের একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নীতিহীন ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। শিক্ষক সমাজ এখন একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও ন্যায়সংগত পরীক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ চায়।
Comments