গোপালগঞ্জে সংঘর্ষ: ৪টি হত্যা মামলা, আসামি ৫৪০০

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ চারটি হত্যা মামলা করেছে। গতকাল শনিবার রাতে সদর থানার চারজন উপপরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন।
চারটি মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা মোট ৫ হাজার ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাগুলোতে দণ্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ১৮৬, ১৫৩, ৩০৭, ৩০২ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
গোপালগঞ্জে সংঘাত-সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন গোপালগঞ্জ পৌরসভার উদয়ন রোডের বাসিন্দা দীপ্ত সাহা (২৫), জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল রানা মোল্লা (৩৫), কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ি ইউনিয়নের হরিণাহাটি গ্রামের রমজান কাজী (১৮), ভেড়ার বাজার ব্যাপারীপাড়া এলাকার ইমন তালুকদার (১৮) ও থানাপাড়া এলাকার রমজান মুন্সী (৩৫)।
এরমধ্যে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোহেল হত্যা হামলার বাদী এসআই আবুল কালাম আজাদ, দীপ্ত সাহা হত্যা মামলার বাদী এসআই শামীম হোসেন, ইমন হত্যা মামলার বাদী এসআই শেখ মিজানুর রহমান। এই তিন হত্যা মামলার প্রতিটিতে অজ্ঞাতনামা দেড় হাজারজনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে রমজান কাজী হত্যা মামলা করেন এসআই মো. আইয়ুব আলী। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ৯০০ জনকে। তবে রমজান মুন্সীর মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
এর আগে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে অভিযোগে মোট চারটি মামলা করা হয়। গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো করে পুলিশ। চারটি মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৫৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ২ হাজার ৬৫০ জনকে আসামি করা হয়।
এ ঘটনায় গত বুধবার থেকে আজ রোববার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩২১ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, সদর থানায় নতুন ৯ জনসহ মোট ১০১ জন, কাশিয়ানীতে ৭৭ জন, মুকসুদপুরে ৮৮ জন, টুঙ্গিপাড়ায় ২৭ জন ও কোটালীপাড়ায় নতুন ছয়জনসহ মোট ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত বুধবার এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। আহত হন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান। রাতেই জারি করা হয় কারফিউ। পরে কারফিউর সময় কয়েক দফা বাড়ানো হয়।
Comments