আইএইএর প্রতিবেদন ইরানে ইসরায়েলি হামলার জন্য উসকানি

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (আইএইএ) পশ্চিমা দেশগুলোর চাপে পড়ে রাজনৈতিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আতঙ্কজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যা ইরানের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনকে আরও উসকে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে এম অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এমন খবর জানিয়েছে ইরানের সংবাদমাধ্যম মেহর নিউজ।
ল্যাভরভ বলেন, 'সংস্থাটির ইচ্ছাকৃতভাবে আতঙ্ক ছড়ানোর ভাষায় তৈরি করা প্রতিবেদনটি ইসরাইলকে হামলার জন্য অতিরিক্ত সুযোগ করে দিয়েছে। আইএইএর অভিযোগকে ইসরায়েল এই হামলার ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার একটি উপাদান হিসেবে ব্যবহার করেছে।'
আইএইএর বোর্ড অব গভর্নরস গত ১২ জুন একটি ইরানবিরোধী প্রস্তাব পাস করে; যা ছিল ইরানের বিরুদ্ধে বিনা উসকানিতে সামরিক আগ্রাসন শুরুর ঠিক এক দিন আগের ঘটনা। তারা দাবি করে, ইরান নাকি তার পারমাণবিক দায়িত্ব ভঙ্গ করেছে।
ল্যাভরভ জোর দাবি করে বলেন, ওই প্রস্তাবটি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল চাপের মুখে তৈরি হয়েছিল এবং তা গড়ে উঠেছিল আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসির প্রতিবেদনের 'অনুল্লেখিত তথ্য' বা 'ইচ্ছাকৃত ইঙ্গিতপূর্ণতা'র ওপর ভিত্তি করে।
তিনি আরও বলেন, 'প্রতিবেদনের ভাষায় অনেক অস্পষ্টতা ছিল, যেটাকে এই চারটি পশ্চিমা দেশ তৎক্ষণাৎ নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে।'
এর আগের এক বক্তব্যে ল্যাভরভ বলেন, ইউরোপীয় নেতারা ইরানের ওপর নেতিবাচক মূল্যায়ন করার জন্য আইএইএকে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। ফলে ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের দায় তাদেরও একাংশে বর্তায়।
রুশ এই কূটনীতিবিদ এটিকে 'খাঁটি নব্য-ঔপনিবেশিক পদক্ষেপ' হিসেবে অভিহিত করে বলেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র আইএইএকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ইরানের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব আদায় করতে চেয়েছে।
এ ছাড়া ল্যাভরভ সতর্ক করে বলেন, যদি আইএইএ-কে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে সেই সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কারণ বর্তমানে গোপনীয়তা রক্ষার সুনির্দিষ্ট কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই।
অন্যদিকে আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আগ্রাসনের কোনো নিন্দা করেননি; যা ইরানি কর্মকর্তাদের তীব্র সমালোচনার কারণ হয়েছে।
তেহরান অভিযোগ করেছে, গ্রোসি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছেন এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে নীরবতা পালন করছেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, আইএইএর একাধিক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, 'শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ।'
Comments