ঢাবিতে চাকরি পরীক্ষার নাম্বার সহ ফলাফল প্রকাশের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট

চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার আলোকে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন (পিএসসি) এর তত্ত্বাবধানে সকল ধরনের চাকরিতে নিয়োগ, নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নাম্বার সহ ফলাফল প্রকাশ, একইসঙ্গে একাধিক চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা এড়াতে মনিটরিং সেল গঠন সহ ১১ দফা দাবি আদায়ে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা।
২ জুন (২০২৫) সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে "চাকরি সংস্কার আন্দোলন" এর ব্যানারে এই অবস্থান ধর্মঘট পালিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফারি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জালাল আহমদ, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ সমন্বয়ক সরদার নাদিম মাহমুদ শুভ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্র বায়েজিদ খান উল্লাস, গণিত বিভাগের ছাত্র এম এ হানিফ নোমান , নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোহাম্মাদ আলী,ন্যাশনাল লেবার পার্টির মুখপাত্র মোঃ শরীফুল ইসলাম,সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা আল ইহযায প্রমুখ।
এ সময় জালাল আহমদ বলেন,আমরা ২০১৩, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারী চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি ৫৬% থেকে ৭% এ নামিয়ে আনতে পেরেছি। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে শুধুমাত্র 'কোটা' পদ্ধতির 'সংস্কার কিংবা কোটা বাতিল' করলেই সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে না।তাই প্রতিটি নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফলেও 'স্বচ্ছতা' নিশ্চিত করতে হবে।পুলিশ ফেরিফিকেশনেও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন , বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ঘুষ ও দুর্নীতির কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা চাকরি পায় না । তাই বিসিএস পরীক্ষা সহ সকল চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা , লিখিত পরীক্ষা এবং ভাইভার নাম্বার সহ ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। তাহলেই কেবল কোনো দুর্নীতির সুযোগ থাকবে না।
তিনি আরো বলেন,পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত আমরা মাঠে আন্দোলনের কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকব। কিন্তু অনলাইনে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
অবস্থান ধর্মঘট থেকে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য ১১ দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবি গুলো হলো:
১) সকল চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখতে নাম্বার সহ ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
২) সকল চাকরির পরীক্ষায় মানসম্মত এবং ভারসাম্যমূলক প্রশ্নপত্র তৈরি করতে হবে।
৩) পুলিশ ভেরিফিকেশনে জবাবদিহিতা নিশ্চিত ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করতে হবে।
৪) নন ক্যাডার বিধি-২০২৩ সংশোধন করে উত্তীর্ণ সবার চাকরির সুযোগ সুনিশ্চিত করতে হবে।
৫) প্রশ্নপত্রের 'সঠিক উত্তর এবং কাট মার্ক' ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
৬) দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে পিএসসি গঠন করতে হবে।
৭) একইদিনে একই সময়ে সম গ্রেড়ের একাধিক পরীক্ষা এড়াতে মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।
৮) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো 'মাইগ্রেশন স্টাইল' চালু করতে হবে।
৯) ভাইভার আগে ক্যাডার চয়েজের সুযোগ দিতে হবে।
১০) কম খরচে খাতা পুন:নিরীক্ষণ করার সুযোগ দিতে হবে।
১১) ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিয়মবহির্ভূত ও ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ বাতিল করতে হবে।
Comments