বর্ণবাদের শিকার হামজা চৌধুরী

লেস্টার সিটি থেকে ধারে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলছেন হামজা চৌধুরী। বাংলাদেশের তারকা ফুটবলারের বর্তমান এই ক্লাব আগামী মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে জায়গা করে নেয়ার দৌড়ে আছে। তবে গত রাতে সেই সম্ভাবনায় বড় ধাক্কা খেয়েছে হামজার দল। বার্নলির কাছে হেরে হারিয়েছে সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে উন্নীত হওয়ার সুযোগ। তবে এখনও আশা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি হামজার দলের। প্লে-অফ পর্ব পার হয়ে ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরে জায়গা করে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে শেফিল্ড ইউনাইটেড। তবে গত রাতের লড়াই মাঠ ছাপিয়ে বিতর্কের ঝড় তুলেছে ইংলিশ ফুটবলাঙ্গনেই।
সোমবার (২১ এপ্রিল) টার্ফ মুরে বার্নলির কাছে ২-১ গোলে হেরে গেছে শেফিল্ড ইউনাইটেড। হামজা চৌধুরীর দলকে হারিয়ে সরাসরি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে জায়গা নিশ্চিত করেছে দ্য ক্লারেটসরা। সেই সঙ্গে শেফিল্ডকে নামিয়ে দিয়েছে প্লে-অফের লড়াইয়ে।
ঘরের মাঠে বার্নলির প্রমোশন নিশ্চিত হওয়ার আনন্দে ক্লাবটির সমর্থকরা মাঠে নেমে এসেছিল। আর সেই সমর্থকরাই ঘটিয়েছে ন্যাকারজনক ঘটনা। এদিন ব্লেডসদের হয়ে পুরো নব্বই মিনিটই মাঠে ছিলেন বাংলাদেশের তারকা মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। দল হারলেও মাঠে উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। দলের জয় উদযাপনে মাঠে নেমে আসা একবা একাধিক বার্নলি সমর্থক বচসায় জড়িয়েছেন হামজার সঙ্গে। যা শুরু হয়েছিল ঠাট্টা-বিদ্রূপ দিয়ে, তা দ্রুতই উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডায় রূপ নেয়। উত্তেজিত হামজাকে তার ক্লাবের স্টাফ ও নিরাপত্তাকর্মীরা টানেলে নিয়ে যেতে শারীরিক শক্তি প্রয়োগে বাধ্য হন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বার্নলির বিজয় উৎসবে মেতে ওঠা সমর্থকরা হামজাকে বর্ণবিদ্বেষমূলক গালাগালি করেছে। যে কারণে তিনি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন।
স্কাই স্পোর্টসের ফুটেজে দেখা যায়, হামজাকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছেন এবং পরে যখন পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, তখন তাকে টানেলে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।
ম্যাচের শেষে শেফিল্ডের কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডার ম্যাচের পর মাঠে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার অভাব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, 'রেফারি আমাদের আগেই বলেছিলেন যে, আমাদের চারপাশে স্টুয়ার্ডরা থাকবে, কিন্তু আমার মনে হয় তারা যেন কোথায় হারিয়ে গেল। পুরোপুরিই হারিয়ে গেল।'
'শেষদিকে মাঠের অবস্থা আতঙ্কজনক হয়ে পড়েছিল, লোকজন মাঠে নেমে এসে আমাদের দিকে এটা ওটা ছুঁড়ে মারছিল।'
তবে মাঠে বার্নলি সমর্থক ও হামজার মধ্যে কী হয়েছে সেটা বিস্তারিতভাবে জানাননি শেফিল্ডের কোচ। তবে ঘটনাটিতে বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না তা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'এগুলো আসলে বলা যায় না। প্লে-অফের জন্য শুভকামনা।'
'এটা বোধগম্য যে তাদের আবেগ চূড়ায় ছিল, কিন্তু আমার মনে হয় না ফুটবল ক্লাবটি কিংবা স্টূয়ার্ডরা আমাদের নিরাপত্তা দিতে চেয়েছে। আমি এরপর রেফারির সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি এটা লক্ষ্য করেছেন।'–শেফিল্ডের কোচ যোগ করেন।
এই মৌসুমে খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ইউনাইটেডকে এরইমধ্যে একাধিকবার জরিমানা গুনতে হয়েছে । এখন তারা অপেক্ষা করছে রেফারি তার ম্যাচ রিপোর্টে এই ঘটনার উল্লেখ করেন কিনা। যদি করেন, তাহলে ক্লাবটি আত্মপক্ষ সমর্থনের অংশ হিসেবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবের বিষয়টি তুলে ধরার কথা ভাবছে।
Comments