ট্রাম্প শুরুতেই যা করছেন বা করবেন
শপথ নেয়ার পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সই করা ৭৮টি আদেশ নাকচ করে দিয়েছেন। আগে থেকেই যা আন্দাজ করা হয়েছিল সেটাই ঘটেছে। তার এই দ্বিতীয় জমানায় প্রথম নজর পড়েছে অভিবাসীদের ওপর। অভিবাসীদের ধরপাকড় করতে নতুন আইন আনার পথে এগোচ্ছে আমেরিকা। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমেরিকার সিনেটে এ সংক্রান্ত বিল পাস হয়েছে। এই বিলটি আইনে পরিণত হলে অভিযুক্ত অভিবাসীদের আটক করতে পারবে আমেরিকান অভিবাসন সংক্রান্ত সংস্থা 'ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টম্স এনফোর্সমেন্ট'।
মার্কিন অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। গত বছরের নির্বাচনী প্রচারেও এ বিষয়টি বারবার বলেছেন তিনি। শপথ গ্রহণের আগে বিজয়ী ভাষণেও ট্রাম্প বলেছেন, "আমরা চাই না অপরাধীরা আমাদের দেশে আসুক।"
২য় মেয়াদে আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করে ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প যে উনিশটি পদক্ষেপ দ্রুত নিয়েছেন এবং নিতে যাচ্ছেন সেগুলো হলো:
১) লক্ষ লক্ষ অপরাধী অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বহিষ্কার।
২) ক্যাচ-এন্ড-রিলিজ পদ্ধতির অবসান।
৩) সীমান্ত সুরক্ষার জন্য সামরিক বাহিনী প্রেরণ।
৪) মাদক চক্রগুলোকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা।
৫) বিদেশি গ্যাংদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
৬) মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা।
৭) নিজস্ব তেল এবং গ্যাসের উপর স্বনির্ভরতা বাড়ানো।
৮) বৈদ্যুতিক গাড়ি বাধ্যতামূলক করার আদেশ বাতিল।
৯) মার্কিন উৎপাদন নিজ দেশ ফিরিয়ে আনা।
১০) উচ্চ কর থেকে আমেরিকানদের সুরক্ষা দিতে শুল্ক সুবিধা।
১১) সবক্ষেত্রে সরকারি সেন্সরশিপ বন্ধ করা।
১২) বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা।
১৩) সাংবিধানিক আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
১৪) শহরগুলিতে আইন ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।
১৫) পাবলিক স্কুলে জাতি এবং লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের অবসান।
১৬) মেধাভিত্তিক জাতীয় সমাজ গঠন।
১৭) দুইটি লিঙ্গের ঘোষণা: পুরুষ এবং মহিলা। এর বাইরে আর কোনো লিঙ্গ নেই।
১৮) কোভিড ভ্যাকসিনের কারণে যাঁরা সামরিক বাহিনী থেকে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের পূর্ণ বেতনসহ পুনঃস্থাপন।
১৯) সেনাবাহিনীর মিশন হলো অন্য দেশের সেবা না করে আমেরিকার সেবা করা, আমেরিকার শত্রুদের পরাজিত করা।
এসবের বাইরে এবারের ট্রাম্পের শাসনামলে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় হতে চলেছে বিশ্ব বাণিজ্য। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন,আমদানি করা পণ্যের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করবেন, যা আমেরিকার উৎপাদন খাতকে অগ্রাধিকার দেবে। আমদানিকৃত সব পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক, কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলেছেন ট্রাম্প। তিনি প্রথমদিন থেকেই এসব শুল্ক কার্যকর করার জন্য নির্বাহী আদেশ জারি করবেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,এসব শুল্ক বিশ্বব্যাপী ভোক্তা পণ্যের দাম বাড়াবে এবং মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি কিছু দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপের কথা বিবেচনা করছে।