হাতিয়া ও চরফ্যাশনে পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার কারণে সাগর উত্তাল থাকায় গত তিন দিন ধরে প্রবল জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসে নোয়াখালীর হাতিয়া ও ভোলার চরফ্যাশনে বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, পানিবন্দি হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার সুখচর, চর ঈশ্বর এবং নলচিরা ইউনিয়নের প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়েছে। নদীর তীরে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ইতিমধ্যে জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসে হাতিয়ায় বেড়িবাঁধের বাইরের নিম্নাঞ্চল সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। ডুবে গেছে দ্বীপের অনেক রাস্তাঘাট, বসত ঘর, আঙিনা, রান্নাঘর ও মাছের ঘের। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোথাও কোমর পানিতে নিমজ্জিত। পানি কমতে শুরু করলেও এখনো অনেক রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
এছাড়াও হাতিয়া উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল দমারচর, ঢালচর, চরগাসিয়া, নলের চর, বয়ার চর, চর আতাউর, মৌলভীর চর ও নিঝুমদ্বীপ ডুবে গেছে। এসব চরে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করে। এ ব্যাপারে নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী বলেন, 'আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যে এগুলো মেরামতের চেষ্টা করব।'
লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলের নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে গত পাঁচ দিনে মেঘনার ভাঙনে ভোলার চরফ্যাশনের হাজারীগঞ্জের খেঁজুরগাছিয়া এলাকায় প্রায় আড়াই শ মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত শুক্র ও শনিবারের বৃষ্টি এবং মেঘনায় জোয়ারের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার এলাকায় নতুন করে ফাটল ধরেছে। এতে উপজেলার হাজারীগঞ্জ এবং জাহানপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার আতংকে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটি দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো সময় বাঁধের বাকি অংশ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বসত ভিটা, খেতের ফসল ও মাছের ঘের ।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, 'খেজুরগাছিয়া বাঁধে জিও রোল দিয়ে ভাঙা অংশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি কমলে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে মাটি ভরাট করে তার সামনে ড্যাম ফেলে ভাঙন রোধ করা যাবে।'
Comments