মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় মামলা
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে নিহত লায়লা ফিরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে এ ঘটনায় মঙ্গলবার (০৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার এজাহারে আজিজুল ইসলাম লিখেন, 'আমি পেশায় একজন শিক্ষক। বর্তমানে শাহজাহান রোডের বাসা নং-৩২/২/এ (৭/বি) ফ্ল্যাটে থাকি। গত চারদিন আগে আসামি (আয়েশা) আমার বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সোমবার ৮ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক ৭টার সময় আমি আমার কর্মস্থল উত্তরায় চলে যাই। আমি আমার কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরবর্তীকালে আমি নিরূপায় হয়ে বেলা অনুমান ১১টার সময় বাসায় ফেরত এসে দেখতে পাই, আমার স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে এবং আমার মেয়ের গলার ডান দিকে কাটা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেইন গেটের দিকে পড়ে আছে। আমার মেয়ের ওই অবস্থা দেখে তাকে উদ্ধার করে পরিছন্নকর্মী মো. আশিকের মাধ্যমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।'
এজাহারে তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখতে পাই, উল্লিখিত আসামি (গৃহকর্মী আয়েশা) সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে কাজ করার জন্য বাসায় আসেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আমার মেয়ের একটি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী (সঠিক পরিমাণ স্মরণ নাই) নিয়ে যায়।
সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আমি নিশ্চিত হই, অজ্ঞাত কারণে সকাল ৭টা ৫১ থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় আমার স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি অথবা অন্য কোনও ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেছে।
মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মোহাম্মদপুরের শাজাহান রোডে মা ও তার মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে নিহত নাফিসার বাবা আজম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটিকে এসআই শহিদুল ওসমান মাসুম তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মোহমুদপুরের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জুয়েল রানা বলেন, মোহাম্মদপুরের শাজাহান রোডে মা ও তার মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি।
ডিএমপির ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, মোহাম্মদপুরের ঘটনায় পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। খুব তাড়াতাড়ি হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হবে এবং আসামিও ধরা পড়বে।
তিনি বলেন, আগের তুলনায় রাজধানিতে খুন-হত্যা অনেক কমে এসেছে। তিনি আরও বলেন, গত নভেম্বর মাসে ১৭ জন খুন হন। সবগুলো হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছি আমরা। এটারও রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হবো।
Comments