নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে জারি করা পরোয়ানা বাতিলের আবেদন খারিজ আইসিসির

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিলের আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আদালত জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধ তদন্তে তাদের এখতিয়ার আছে এবং ইসরাইলের দাবি প্রত্যাখ্যানযোগ্য।
গাজায় গণহত্যার যুদ্ধ বিষয়ে আইসিসির বিচারের এখতিয়ার করে সম্প্রতি নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিলের অনুরোধ করে ইসরাইল। গত সপ্তাহে (৯ জুলাই) আইসিসির বিচারকরা এ ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্ত জানান যা গত বুধবার (১৬ জুলাই) আইসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চলমান ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে আদালতের বৃহত্তর তদন্ত স্থগিত করার জন্য ইসরাইলি অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করেছেন বিচারকরা।
গাজা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে নেতানিয়াহু ও ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আইসিসির বিচারকরা।
এদিকে গাজায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হামলা চলছেই। ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাবারের সন্ধানে থাকাদের লক্ষ্য করে আবারও গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে দখলদার বাহিনী।
বুধবারের (১৬ জুলাই) এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ, শ্বাসরোধ ও হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে হয়ে অন্তত ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেও যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোন অগ্রগতি হচ্ছে না।
হামাসের অভিযোগ, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। হামাস আরও জানিয়েছে, উপত্যকা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তারা পায়নি। যে কারণে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কোনো বাস্তব অগ্রগতি হয়নি।
গাজায় দীর্ঘস্থায়ী সেনা উপস্থিতি ধরে রাখতে ইসরাইল সময় নষ্ট করছে বলেও অভিযোগ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির। এদিকে দোহায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলমান আছে বলে জানিয়েছে কাতার। তবে আলোচনায় এখনও কোনো সময়সীমা নির্ধারণ হয়নি।
এদিকে রাফাহ থেকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের 'হিউম্যানিটারিয়ান সিটি' পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা চাইছেন নিজেদের ভিটেমাটিতে ফিরতে ও রাফা পুনর্নির্মাণে কাজ করতে। এই প্রকল্প নিয়ে ইসরাইলের রাজনৈতিক অঙ্গনেও বিতর্ক তুঙ্গে।
বিরোধী দলগুলো বলছে, এটা এক ধরনের 'কনসেনট্রেশন ক্যাম্প', যা গাজায় নৃশংস জাতিগত নিধন ঘটাতে পারে। যদিও নেতানিয়াহু এই প্রকল্পকে ফিলিস্তিনিদের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে দাবি করেছেন।
এদিকে ফ্রান্সের একটি আদালত প্রথমবারের মতো গাজার ফিলিস্তিনি যারা জাতিসংঘের সুরক্ষায় নেই, তাদেরকে ১৯৫১ সালের জেনেভা কনভেনশনের আওতায় শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সামরিক অভিযানের ধরণ ও গাজার দীর্ঘ সঙ্কটের কারণে এই শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা দেয়া উচিত।
Comments