ইসরায়েলি আক্রমণের পর শুরু হওয়া যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশগ্রহণ করছে: নরওয়ে

নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইড বলেছেন, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র 'এখন সরাসরি এমন একটি যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে, যা ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করার পর শুরু হয়েছিল'।
সরকারি সম্প্রচারক এনআরকে অনুসারে, বার্থ এইড সাংবাদিকদের বলেন, 'ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আরও তীব্রতা বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।'
তিনি বলেন, 'এর অর্থ হলো তারা (যুক্তরাষ্ট্র) এখন সরাসরি এমন একটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে, যা ইসরায়েল ইরান আক্রমণ করার সময় শুরু হয়েছিল।'
নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'আন্তর্জাতিক আইন সকল পক্ষকে সম্মান করতে হবে। এখন যেহেতু অনেক ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, আমরা যুদ্ধের আরও তীব্রতা দেখতে পাব - আমাদের অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইনের গুরুত্ব মনে করিয়ে দিতে হবে।'
১৩ জুন রাতে ইরানের মাটিতে আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। লক্ষ্যবস্তু হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। ঘরবাড়িতে সরাসরি আঘাত হানার ফলে বেসামরিক নাগরিকরাও প্রাণ হারান। এরপর তেহরান ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে প্রতিশোধমূলক আক্রমণ চালায়।
পরের দিনগুলোতে ইসরায়েলের আক্রমণের বিরুদ্ধে ইরানও ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। উভয় পক্ষই হতাহতের খবর দিচ্ছে এবং বেশ কয়েকটি স্থাপনার ক্ষতি স্বীকার করেছে।
এ অবস্থায় আজ রোববার ভোরে যুক্তরাষ্ট্র বি-২ স্টেলথ বিমান দিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার ওপর ভারী বোমা হামলা চালায়। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় 'সফল আক্রমণ' চালিয়েছে।
মার্কিন হামলার পর ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের 'গুরুতর ও নজিরবিহীন লঙ্ঘন' বলে বর্ণনা করেছে। পাশাপাশি এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পূর্ণ অধিকার রয়েছে বলে জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'বিশ্বকে ভুলে গেলে চলবে না যে, কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাঝপথে যুক্তরাষ্ট্রই বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং ইসরায়েলের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দিয়ে এখন ইরানের বিরুদ্ধে বিপজ্জনক যুদ্ধ চালাচ্ছে।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'এটি স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্র কোনো নিয়ম বা নৈতিকতা মানে না। গণহত্যাকারী ও দখলদার এক শাসন ব্যবস্থার লক্ষ্য পূরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কোনো আইন বা অপরাধের তোয়াক্কা করে না।'
Comments