সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি আর পুনর্বহাল করবে না ভারত: অমিত শাহ

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আন্তর্জাতিক তিনটি নদীর পানিবণ্টন নিয়ে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি আর পুনর্বহাল করবে না নয়া দিল্লি। এমন ঘোষণাই দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই ঘোষণার পর, এই চুক্তি পুনর্বহাল নিয়ে পাকিস্তানে যে আশাবাদ ছিল তাও ফিকে হয়ে গেল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি আর কখনো পুনর্বহাল করা হবে না। পাকিস্তানে যে পানি যাচ্ছিল, তা অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য সরিয়ে নেওয়া হবে। আজ শনিবার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে, ১৯৬০ সালের এই চুক্তির আওতায় ভারত ও পাকিস্তান সিন্ধু নদী ব্যবস্থার পানি ব্যবহার করছিল। কিন্তু গত এপ্রিলে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে এক হামলায় ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর দিল্লি ওই ঘটনাকে 'সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে উল্লেখ করে পাকিস্তানকে দায়ী করে চুক্তি থেকে নিজেদের অংশগ্রহণ 'স্থগিত' করে।
সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তির মাধ্যমে ভারতীয় ভূখণ্ড হয়ে পাকিস্তানে প্রবাহিত তিনটি বড় নদীর পানি ব্যবহারের অধিকার নিশ্চিত করেছিল ইসলামাবাদ। এই তিনটি নদীর অববাহিকাতেই পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ চাষাবাদ হয়ে থাকে। পাকিস্তান হামলায় তাদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও চুক্তিটি এখনো কার্যকর নয়। যদিও গত মাসে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের পর একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, 'না, এটা আর কখনো পুনর্বহাল হবে না।' তিনি আরও বলেন, 'যে পানি এত দিন পাকিস্তানে যাচ্ছিল, সেটি আমরা রাজস্থানে নেওয়ার জন্য একটি খাল নির্মাণ করব। পাকিস্তান যে পানি এত দিন অন্যায়ভাবে পাচ্ছিল, তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।'
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ক্ষমতাধর সদস্য হিসেবে বিবেচিত অমিত শাহের এই মন্তব্যে সিন্ধু চুক্তি নিয়ে আলোচনার আশা থাকা ইসলামাবাদের সম্ভাবনা এখন আরও ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। রয়টার্স গত মাসে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, প্রতিক্রিয়াস্বরূপ পাকিস্তানে প্রবেশ করা একটি প্রধান নদী থেকে পানি সরিয়ে নেওয়ার হার নাটকীয়ভাবে বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে ভারত।
রয়টার্সের অনুরোধের পরও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে অতীতে তারা বলেছে, চুক্তিতে একতরফাভাবে কোনো পক্ষের সরে যাওয়ার সুযোগ নেই এবং পাকিস্তানের দিকে বয়ে চলা নদীর পানি আটকে দেওয়া হলে সেটিকে 'যুদ্ধ ঘোষণা' হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
এ ছাড়া, চুক্তি স্থগিতের ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়েও ভাবছে ইসলামাবাদ।
Comments