আশফাক নিপুণের পোস্টে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের জবাব

রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে গত ৯ জুলাই সন্ধ্যায় নির্মমভাবে খুন হন ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯)। পাথর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় ও শরীরে হামলা চালানো হয়। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। শোক ও ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শোবিজ অঙ্গনও।
এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নাট্যনির্মাতা আশফাক নিপুণ। অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার একটি ফেসবুক পোস্ট নিজের টাইমলাইনে শেয়ার করেন তিনি। শেয়ার করা পোস্টে উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে নিপুণ লেখেন, "আপনার মতো তরুণদের দিকে আমার মতো পুরো দেশ তাকিয়ে আছে। এসব চাঁদাবাজি, দখলবাজি, জের ধরে খুনোখুনি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় আপনার সরকারের ওপরেও বর্তায়। দায় না নিয়ে হাসান মাহমুদের মতো দায় চাপানোর চটকদার রাজনীতি আমরা নতুন কোনো সরকারের ভেতর আর দেখতে চাই না।"
নিপুণের এই বক্তব্য উপেক্ষিত থাকেনি। তার পোস্টের এক ঘণ্টার মাথায় মন্তব্য করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি লেখেন, "কঠোর হস্তে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি নিপুণ ভাই।"
এরপর তিনি মুরাদনগরের একটি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, "সেখানে হাতেনাতে চাঁদাবাজকে ধরার পর তাকে ছাড়াতে থানায় হামলা করে বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তিন ঘণ্টার সেই হামলায় পুলিশ ও সাধারণ মানুষ আহত হয়। পরে কুমিল্লা থেকে অতিরিক্ত বাহিনী ও যৌথবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও তারা মাসখানেকের মধ্যেই জামিনে ছাড়া পায়।"
তিনি আরও বলেন, "এই কঠোরতার কারণেই একজন উচ্চ পর্যায়ের বিএনপি নেতা আমার নামে অভিযোগ তোলে যে, আমার যন্ত্রণায় মুরাদনগরের বিএনপি কর্মীরা নাকি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। আমাদের এই সরকারের সবাই তো বিপ্লবী নন, অনেক সময় কঠোরতা অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। অথচ জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার গুরুদায়িত্ব যেন একমাত্র সরকারের কাঁধেই।"
আসিফ মাহমুদ তার মন্তব্যের শেষ অংশে লেখেন, "মিডিয়ায় এসে বলবে ইন্টারিম ব্যবস্থা নেয় না কেন, আবার ভেতরে ভেতরে সন্ত্রাসীদের ছাড় দিয়ে চলে। সন্ত্রাসীরা যদি উচ্চ পর্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতা পায়, তাহলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সম্ভব কীভাবে? প্রশাসনযন্ত্রের ৫-১০% বাদ দিলে বাকি সবাই তো ক্ষমতার গোলাম। এই সরকার আর কয়দিন?"
উল্লেখ্য, মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ কে নির্মমভাবে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার ঘটনা নিয়ে আলোচনা চলছে। সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বিএনপির যুব সংগঠন যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর যুবদল অভিযুক্তদের বহিষ্কার করেছে। পুলিশ ইতোমধ্যে প্রধান আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
Comments