জন্মদিনের অভিজ্ঞতা জানালেন বলিউডের কিং খান
শুক্রবার (২ নভেম্বর) ছিল বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের জন্মদিন। ৫৯-তে পা দিলেন এই প্রখ্যাত অভিনেতা। তার জন্মদিন মানেই ভক্তদের জন্য আলাদা উন্মাদনা। এ দিন প্রিয় তারকাকে এক ঝলক দেখার জন্য তার মুম্বাইয়ের বাড়ি 'মান্নাত'-এর সামনে জড়ো হয় হাজার হাজার ভক্ত। তারমধ্যেই হয়তো কেউ একদিন হয়ে উঠবেন বলিউড তারকা। যেমন হয়ে উঠেছেন সুশান্ত সিং রাজপুত, রাজকুমার রাও কিংবা শর্বরী বাগ!
বয়স শাহরুখের কাছে কেবলই একটি সংখ্যা। নিজেকে ২৫-এর তারুণ্যে ভরপুর রেখেছেন তিনি। তাইতো এখনো জন্মদিন এলে শিশুদের মতো অভিমান করেন। শিশুরা যেমন জন্মদিনে কেই উপহার না দিলে কষ্ট পান, তেমনি শাহরুখের এই বয়সে এসেও রয়েছে উপহার নিয়ে আক্ষেপ!
জন্মদিনে আজ পর্যন্ত পাওয়া সেরা উপহার কোনটি? সাংবাদিকের প্রমন প্রশ্নের জবাবে শাহরুখ বলেছিলেন, 'সব উপহারই সেরা। তবে আমার এক ভক্ত আমাকে তাবিজ উপহার দিয়েছিলেন। মজার ব্যাপার হলো, আমাকে কেউ উপহারই দিতে চায় না। সবাই বলে, একে কী দেব, ওর কাছে সবকিছুই তো আছে। এ নিয়ে কিন্তু আমার মন খারাপ হয় (মজা করে বললাম)। তবে সারা বিশ্ব থেকে মানুষের ভালোবাসা ভরা শুভেচ্ছা পাই, তখন আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।'
ছোটবেলার জন্মদিন নিয়ে শাহরুখ বলেন, 'আসলে তখন জন্মদিন উদযাপনের অতটা চল ছিল না। আর মনে রাখার মতো কোনো জন্মদিন ছোটবেলায় উদযাপন করিনি। ১৯৮৫-৮৬ সালে হবে পাঁচ-ছয়জন বন্ধু আমাদের বাড়িতে আসত। আর আমি ওদের সঙ্গে কেক কাটতাম। স্কুলে পারলে টফি ও মিষ্টি নিয়ে যেতাম বন্ধুদের দেওয়ার জন্য। না, সে রকম কিছু বানাতেন না। আমাদের রেস্তোরাঁ ছিল। জন্মদিনের দিন সেখান থেকে স্পেশাল খাবার আসত। একদমই ঠিক শুনেছেন। আব্বা আমাকে পুরোনো টাইপরাইটার, ক্যামেরা, টেপ রেকর্ডারসহ আরও অনেক পুরোনো জিনিস উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। জন্মদিনে পাওয়া আব্বার উপহারগুলো আমি আজও সযত্নে তুলে রেখেছি।'
তারকা হওয়ার আগে কীভাবে জন্মদিন উদ্যাপন করতেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বন্ধুরা মিলে সেলিব্রেট করতাম। বাড়িতে আত্মীয়রা আসতেন। আর তখন ল্যান্ডলাইন ছিল। ল্যান্ডলাইনে বন্ধুদের ফোন আসত। তবে কখনোই বিশেষ কিছু হতো না। কিছু মানুষ তার জন্মদিন নিয়ে খুবই উত্তেজিত থাকেন। আবার কেউ কেউ নিজের জন্মদিনকে ঘিরে খুব একটা উত্তেজনা দেখান না। আমি এই দ্বিতীয় দলে পড়ি।'
তারকাখ্যাতি পাওয়ার পর শাহরুখ প্রথম জন্মদিন পালন করেছিলেন ১৯৯৮ সালে। সেই প্রথম বলিউডের প্রায় সব তারকা তার জন্মদিনের পার্টিতে এসেছিলেন। অমিততাভ বচ্চন থেকে শুরু করে শ্রীদেবী! ওই দিনটা তার কাছে খুব বিশেষ ছিল।
কখন অনুভব করলেন যে আজ আমি সুপারস্টার? জানতে চাইলে শাহরুখ খান বলেন, ''দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে (ডিডিএলজে) ও কুছ কুছ হোতা হ্যায়-এর পরপরই প্রচুর মানুষের ভালোবাসা পেতে শুরু করি। সবাই বলল, আমার ছবি এখন ভালো চলছে। ডিডিএলজে সত্যিই ভালো ছবি। এই ছবি আমাকে একটা জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিল। তখন স্টার বলে ভাবিনি। তবে বুঝেছি আমি ভালো কাজ করছি। এই সিনেমাগুলোর পরপরই আমার এক জন্মদিনের দিন ফিল্ম সিটিতে প্রায় ৪৫ জন মানুষ ফুলের তোড়া নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। আমি আমার ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করি এরা কারা। ম্যানেজার বলেন, এরা টিকিট ব্ল্যাকার। আমি সত্যি একটু অবাক হয়ে যাই। আমার সঙ্গে তারা কেন দেখা করতে এসেছেন। তখন তারা আমাকে বলেন, 'আপনার জন্যই মানুষ আবার হলমুখী হয়েছে। আর আপনার জন্যই আমাদের ব্যবসা ভালো চলছে। ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা করেছি। তাই আজ আপনাকে আমরা ধন্যবাদ জানাতে এসেছি।''