সংকটে পুঁজিবাজার: সূচকের পতন, লেনদেন তলানিতে

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে চলছে টানা পতন। লেনদেনের পরিমাণ তলানিতে এসে ঠেকেছে। বাজার চাঙ্গা করতে নীতি-নির্ধারকদের নানা উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ভেঙে পড়ছে প্রতিনিয়ত। আজ রোববার সপ্তাহের প্রথমদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০ পয়েন্টের বেশি কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৩৬ পয়েন্টে। এটি ২০২০ সালের ১৯ আগস্টের পর সর্বনিম্ন অবস্থান।
অন্যদিকে, লেনদেনের চিত্র আরও বেশি হতাশাজনক। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৩৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা স্মরণকালের মধ্যে সর্বনিম্ন। একসময় যে বাজারে প্রতিদিন গড়ে হাজার কোটি টাকার উপরে লেনদেন হতো, সেখানে বর্তমান লেনদেনের চিত্র গভীর সংকটের ইঙ্গিত বহন করে।
বাজার চাঙা করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তার কার্যকর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে উৎসাহ দেওয়া, প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, বিনিয়োগকারী সহায়তা তহবিল চালু, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকসহ একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বাজারে আস্থা ফিরছে না।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এখন পর্যন্ত নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বেশিরভাগই মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি। কিন্তু শেয়ারবাজারের টানা পতন রোধ করতে হলে জরুরিভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদি ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তা নাহলে বাজারের অবস্থা আরও সংকটময় এবং অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।
আজ ডিএসইতে সবগুলো সূচকের পতনের পাশাপাশি মোট ২৩৫ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। গত কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিলো ২৭৮ কোটি ০২ লাখ টাকার শেয়ার। আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০.০৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৩৬.৩৩ পয়েন্টে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ৪.৬৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩২.৫৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬.৭৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৪৬.৫৩ পয়েন্টে।
ডিএসইতে ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে ১০০টির দর বেড়েছে, ২১৫টির দর কমেছে এবং ৮১টির অপরিবর্তিত রয়েছে।
ডিএসইতে আজ মোট ২৩৫ কোটি ৫১ লাখ ১৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৭৮ কোটি ২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪২ কোটি ৫১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।
আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। এ খাতে ৩২ কোটি টাকা লেনদেন হয়। ব্যাংক খাতে সাড়ে ৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) আজ ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন ৪ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৫৫টির, কমেছে ৯৫টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৩৪টির। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৬.৮৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৬৭.০৩ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচক কমেছে ১৪.৬৯ পয়েন্ট।
Comments