১০ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি কেরানীগঞ্জের জাবালে নূর টাওয়ারের আগুন
ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায় অবস্থিত জাবালে নূর টাওয়ারে লাগা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ১০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের টানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আগুনের তীব্রতা পুরোপুরি কমেনি; বরং দিক পরিবর্তন করে আশপাশের কয়েকটি দোকানে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোর আনুমানিক সকাল ৫টার দিকে ভবনের নিচতলায় থাকা কাপড়ের ঝুটের গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন পুরো মার্কেটজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে আরও ছয়টি ইউনিট যোগ হলে মোট ২০টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত হয়। তবে বেজমেন্টে দোকান ও ঝুট গোডাউন থাকায় এবং ঘন ধোঁয়ার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় এখনও ধোঁয়া রয়েছে এবং কিছু স্থানে আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে। আগুন যাতে পাশের ভবনে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
দোকান মালিকদের অভিযোগ, নিরাপত্তার অজুহাতে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়েছে। ভবনটিতে প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকান রয়েছে। তাদের দাবি, অগ্নিকাণ্ডে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের সময় ভবনের ভেতরে আটকা পড়া ৪২ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, দশ তলা ভবনটির আট তলা আবাসিক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভবনটির মালিক হাজী নুর আলম। ভবন নির্মাণ ও ব্যবহারে নিয়মনীতি অনুসরণ করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ঘন ধোঁয়ার কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের সব ইউনিট সমন্বিতভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
Comments