রাজশাহীতে লাখো ভক্তের পদচারণায় মুখরিত খেতুরীধাম

রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুর (গৌরাঙ্গ বাড়ি) এলাকায় প্রতিবারের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রেমভক্তির মহাজন ঠাকুর নরোত্তম দাসের তিরোভাব তিথি মহোৎসব। দেশ-বিদেশের লাখো ভক্ত, সাধক ও ধর্মপ্রাণরা অংশ নিয়েছেন এই মহৎসবে।
আজ রবিবার (১২ অক্টোবর) খেতুরীধামের নিরাপত্তা ও আয়োজনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতন।
অনুষ্ঠান সূচনা ও আচার–অনুষ্ঠান
রীতি অনুযায়ী বাংলা কার্তিক মাসের প্রথম তিন দিনে শুরু হয় তিরোভাব তিথি স্মরণ।
প্রথম দিন "শুভ অধিবাস" দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নাম ও জপ, সংকীর্তন, ভোগ আরতির মাধ্যমে চলছে ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠান।
শেষ দিন সকালে "দধি মঙ্গল", দ্বি‑প্রহরে ভোগ আরতি ও মাহান্ত বিদায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
খেতুরীধামে মিলিত হয়েছে লাখো ভক্ত।দেশ-বিদেশের ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত প্রেমাঙ্গন।দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভারতের কিছু অংশ থেকেও ভক্তরা এসেছেন। চলাচলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে খেতুরীধামের রাস্তা তার সংযোগ এলাকায়। উৎসবকে ঘিরে সম্প্রতি দুপক্ষের দ্বন্দ্ব সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় — গৌরাঙ্গদেব ট্রাস্টি বোর্ডের সঙ্গে অন্য একটি পক্ষের বিরোধের কারণে।
রাজশাহী জেলা পুলিশ উৎসবক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রায় ১৫০০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছে। সেনাবাহিনী ও টহল জোরদার রেখেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল পাঁচ স্তরের। পুলিশ সুপার খেতুরীধাম নিজে পরিদর্শনে যান ও পরিস্থিতি সরজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন ও দফায় দফায় তদারকি করছে।
খেতুরী ধামকে ৪০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ধাম হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা কখনো কখনো স্থানীয় উত্তেজনার কারণ হয়েছে।
অতীতে ভক্ত সমাবেশ নিরুৎসাহিত অবস্থায় শেষ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে এবার তিন দিন ব্যাপি এ আয়োজনে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ছিল চোখে পড়ার মতো। মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস সেই সৌন্দর্যেকে করেছে আরো প্রাণবন্ত । প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর সতর্কতা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিশেষ ভুমিকায় এই বিশাল মহাযজ্ঞ আজ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হচ্ছে।
Comments