বিএনপি অফিসে হামলা-ভাঙচুর মামলায় বরগুনায় ১২ আইনজীবীর কারাবাস

বরগুনায় বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলায় একসঙ্গে আওয়ামীপন্থি ১২ আইনজীবীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাইফুর রহমান তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
আইনজীবীরা হলেন বরগুনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাহবুবুল বারী আসলাম, মো. মজিবর রহমান, বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির, মো. নুরুল ইসলাম, এম. মজিবুল হক কিসলু, হুমায়ুন কবির পল্টু, জুনায়েদ হোসেন জুয়েল, আবদুল্লাহ আল মামুন, ইমরান হোসাইন, সাইমুল ইসলাম রাব্বি, আবদুর রহমান জুয়েল ও আমিরুল ইসলাম মিলন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আলহাজ্ব মো. নুরুল আমীন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নজরুল ইসলামের ছেলে এসএম নঈমুল ইসলাম ২০২৩ সালের ১৭ মার্চের ঘটনা উল্লেখ করে ২০২৫ সালের ৩০ এপ্রিল বরগুনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ওই দিন বেলা ১১টার দিকে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর কবীর, সাবেক এমপি গোলাম সরোয়ার টুকু ও শওকত হাসানুর রহমান রিমনের নেতৃত্বে ১৫৮ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী বরগুনা জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন, যাতে ৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
মামলার পর ১২ আসামি চলতি বছরের ২ জুলাই হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন নেন এবং ২১ জুলাই বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিননামা দাখিল করেন। পরে জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ২৪ জুলাই তারা আবারও জামিনের আবেদন করেন। আদালত সেদিন নথি তলব করে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন। মঙ্গলবার শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আবদুল মোতালেব মিয়া ও মো. হাবিবুর রহমান বলেন, 'আমরা আবারও জামিনের জন্য আবেদন করবো। আসামিরা প্রত্যেকেই কোর্টে নিয়মিত কর্মরত আছেন। পালানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। তা ছাড়া মামলাটি দুই বছর আগের রাজনৈতিক ঘটনা নিয়ে করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে অনেক আসামি আওয়ামী লীগের সদস্যও নন।'
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আলহাজ্ব মো. নুরুল আমীন বলেন, 'মামলাটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা হয়েছে, যা জামিনযোগ্য।'
১২ আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় বরগুনার আইন অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
Comments