খুলনা খাদ্যগুদামে সরবরাহকৃত গম নমুনা পরীক্ষায় নিম্নমানের প্রমাণিত হয়নি

খুলনা খাদ্যগুদামে সরবরাহকৃত গমের নমুনা পরীক্ষায় এটি নিম্নমানের বা খাওয়ার অযোগ্য প্রমাণিত হয়নি। খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য পরীক্ষাগারের কেমিস্ট অফিসার মনিরুল হাসান ও মসিউর রহমান এই গমের নমুনা পরীক্ষা করে সুস্পষ্ট রিপোর্ট প্রদান করেন। একইসঙ্গে খাদ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন গঠিত একাধিক তদন্ত কমিটিও গমের গুণাগুণ যাচাই করে ইতিবাচক প্রতিবেদন দিয়েছেন। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত খবর মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে।
খুলনা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গত ১৬ ও ১৮ জুলাই হরিণাকুন্ডুর এক যুবলীগ নেতা এলবি লিটনের মালিকানাধীন ট্রাকে খুলনা এলএসডি থেকে সদর খাদ্যগুদামে গম সরবরাহ করা হয়। ট্রাক আনলোড করতে বিলম্ব হওয়ায় এলবি লিটন অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। খাদ্য কর্মকর্তারা এই দাবিকে অগ্রাহ্য করলে তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কিছু মিডিয়াকর্মীকে সাথে নিয়ে ঘটনা নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন করেন।পরবর্তীতে কোনরকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই কিছু গণমাধ্যমে এই ঘটনা প্রকাশ পায়। ফলস্বরূপ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয় এবং দুর্নীতি দমন কমিশন গুদামে অভিযান চালিয়ে কিছু গম জব্দ করে। গঠিত হয় একাধিক তদন্ত কমিটি। তবে সব পর্যায়ের তদন্ত ও ভৌত বিশ্লেষণে প্রমাণিত হয়েছে, খুলনা এলএসডি থেকে সরবরাহকৃত গমের মান ভালো এবং তা সম্পূর্ণরূপে খাওয়ার উপযোগী।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক প্রিয় কমল চাকমার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে: গমের আর্দ্রতা ১৩%, বিজাতীয় পদার্থ ০.৪৯%, কীটাক্রান্ত দানা ২.০০%, রঙ ও গন্ধ স্বাভাবিক এবং গ্রেইন ডাস্ট ০.৫৫%। পরীক্ষাগার থেকেও এই গম সাধারণ বিলি ও বিতরণের উপযোগী বলে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে।
খাদ্য বিভাগ জানায়, এই গম উক্ত খামাল থেকে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও ক্যাডেট কলেজ, জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিতরণ করা হয়েছে এবং কোথাও থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। মোট সরবরাহকৃত ৯৬.৬৬ মেট্রিক টন গম ইপি, ওপি ও ওএমএসের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। ওএমএস খাতের গম মিল করে আটা হিসেবে ভোক্তাদের মাঝে বিতরণ হলেও কোন অভিযোগ আসেনি।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মোঃ নুরুন্নবী, সদস্য মোঃ মুক্তাদীর রহমান ও কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক আনিছুর রহমান তাদের যৌথ প্রতিবেদনে জানান, গমের স্থায়িত্বকাল এক বছর। চাক্ষুষভাবে কিছুটা খারাপ মনে হলেও পরীক্ষায় গমের মান উত্তম এবং আটা খাওয়ার উপযোগী।
এ বিষয়ে খুলনা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক তরুণ ঘোষ বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন, তাই এই মুহূর্তে মন্তব্য করা সমীচীন নয়।
Comments