সাংবাদিক শওকত মাহমুদ কারাগারে, রিমান্ড শুনানি ১১ ডিসেম্বর
সরকার উৎখাতে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে রমনা মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে, সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির রমনা বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ। তবে এই মামলায় মূল নথি না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠিয়ে রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ১১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি শওকত মাহমুদসহ আরও অজ্ঞাতনামা আসামিরা এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এবং উচ্চপদস্থ লোকজন ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপনে সভা-সমাবেশ ও পরামর্শ করেছেন। বিভিন্ন স্থানে গণবিক্ষোভের মাধ্যমে সরকারের সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র, সহায়তা ও প্ররোচিত করার মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন মর্মে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এতে আরও বলা হয়, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে এই মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাকে ১০ দিন নিজ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এই মামলায় মূল নথি না থাকার কারণে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর মালিবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এর আগে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিমকে (৫৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেদিন রাজধানীর মিন্টো রোড এলাকায় একটি প্রাডো গাড়িতে করে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন তিনি। পুলিশ গাড়ি থামিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ওই এলাকায় অবস্থানের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এরপর তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে রমনা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। সেই মামলার সূত্র ধরেই এবার শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ দীর্ঘ সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
Comments