ভোট গ্রহণের সময় ও বুথ সংখ্যা বাড়ানোর সুপারিশ ইসির
সরকারের নির্দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও সক্ষমতা পর্যালোচনা শুরু করেছে। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।
ইসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবার একইদিনে নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হলেও এটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে না। তবে ভোটারদের দুটি ব্যালট দেওয়ার কারণে বুথ বাড়ানো ও সময় কিছুটা এগিয়ে আনা যুক্তিযুক্ত হতে পারে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দুটি ভোটের জন্য আলাদা ব্যালট ব্যবহার করা হবে এবং নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাই গণভোট পরিচালনার দায়িত্বও পালন করবেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানান, দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই তফসিল ঘোষণার তারিখ নিশ্চিত হবে। আগেই জানানো হয়েছিল, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি জানান, আসন্ন নির্বাচনে বুথ সংখ্যা বাড়াতে হতে পারে।
তার ভাষ্য, 'সুযোগ থাকলে ভোটের সময়ও বাড়ানো যেতে পারে, যাতে ভোটাররা দুটি ভোটের ব্যালট নিতে ও ভোট দিতে পর্যাপ্ত সময় পান।'
সাধারণত জাতীয় নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট হয়। এবার ভোট শুরুর সময় আরও এগিয়ে আনার বিষয়টি বিবেচনাধীন।
ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের জন্য সারাদেশে ৪২ হাজার ৭৬১টি কেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৭৩৯টি বুথ নির্ধারণ করেছে ইসি। প্রতি ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র এবং প্রতি ৫০০ পুরুষ ও ৪০০ নারী ভোটারের জন্য আলাদা বুথ থাকবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, এই হিসাব কেবল সংসদ নির্বাচনের জন্য করা হয়েছিল। একইদিনে নির্বাচন ও গণভোট হলে কেন্দ্র না বাড়লেও বুথ বাড়াতে হবে।
ভোট গণনা সহজ করতে কিছু কমিশনার অতিরিক্ত ভোটকর্মী নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন। সাধারণত প্রতিটি কেন্দ্রে একজন প্রিসাইডিং অফিসার, একজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং প্রতিটি বুথে দুইজন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন।
গণভোট আয়োজনের আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে কমিশনার মাছউদ বলেন, গণভোটের আগে কমিশনকে আইনগতভাবে ক্ষমতা দিতে হবে।
প্রস্তাবিত সংবিধান সংশোধনী ও প্রয়োজনীয় অধ্যাদেশ তিন থেকে চার কর্মদিবসের মধ্যেই প্রস্তুত হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তিনটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭৭ ও ১৯৮৫ সালের গণভোটকে যথাক্রমে তৎকালীন শাসকদের ক্ষমতা বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ হিসেবে দেখা হয়। ১৯৯১ সালের গণভোট দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের ভিত্তি তৈরি করেছিল।
Comments