চাঁদা না পেয়ে কৃষকের ৩৫০ আমগাছ কেটে দিল দুর্বৃত্তরা
নওগাঁর পত্নীতলায় চাঁদা না দেওয়ায় এক আমচাষীর চার বছর ধরে লালন করা আমবাগান রাতের আঁধারে ধ্বংস করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভুক্তভোগী কৃষক হাবিবুল্লাহর দাবি, তার বাগানের ৩৫০টি আমগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা এই ঘটনা ঘটায়। হাবিবুল্লাহ জানান, ৯৩ শতক জমিতে তিনি 'বেনানা ম্যাংগো' জাতের আমবাগান গড়ে তুলেছিলেন, যা তার জীবনের শেষ অবলম্বন ও ভবিষ্যতের আশার প্রতীক ছিল। গত বছর ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি আরও বড় উৎপাদনের স্বপ্ন দেখছিলেন।
হাবিবুল্লাহ অভিযোগ করেন, স্থানীয় ছানাউল, মতিবুল, দেলোয়ারসহ কয়েকজন ব্যক্তি একটি প্রভাবশালী দলের নাম ব্যবহার করে তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল।
আগে জমি নিয়ে আজিজুল ও গফফার নামের আরেক পক্ষের সঙ্গে বিরোধ ছিল, তবে আদালতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা সরে দাঁড়ায়। এরপরই চাঁদাবাজ চক্র বাগানটিকে টার্গেট করে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, "গত ১০ দিন ধরে ছানাউল ও তার সহযোগীরা চাপ দিচ্ছিল চাঁদা দিতে। অস্বীকৃতি জানালে বৃহস্পতিবার রাতে ৬–৭ জনের দল বাগানে ঢুকে ৩৫০টি গাছ কেটে ফেলে।"
শুক্রবার সকালে বাগানে গিয়ে হাবিবুল্লাহ দেখেন সবুজ বাগানটি একেবারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে—কাটা গাছের গুঁড়ি, ছেঁড়া ডাল ও বিবর্ণ পাতা ছাড়া কিছুই নেই।
এলাকাবাসীর মধ্যে নিন্দার ঝড় বইছে। স্থানীয়দের মতে, কৃষিনির্ভর অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনা কেবল একজন চাষির ক্ষতি নয়—এটি সমগ্র সমাজের বিরুদ্ধে অপরাধ।
হাবিবুল্লাহ ছানাউলসহ পাঁচজনকে আসামি করে পত্নীতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নায়েতুর রহমান বলেন, "অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
হাবিবুল্লাহ বলেন, "আমার চার বছরের পরিশ্রম শেষ। আমি শুধু ন্যায়বিচার চাই। যেন আর কোনো কৃষক এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।"
Comments