গাজীপুরে জবাইয়ের কারখানায় অভিযান, জীবিত–মৃত ৪৫ ঘোড়া জব্দ
গাজীপুর মহানগরীর হায়দ্রাবাদ রথখলা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ঘোড়া জবাই ও মাংস সরবরাহের অভিযোগে একটি কারখানায় অভিযান চালিয়েছে র্যাব-১ ও গাজীপুর জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলা অভিযানে জীবিত ৩৭টি এবং জবাইকৃত আটটি—মোট ৪৫টি ঘোড়া জব্দ করা হয়। অভিযানের সময় কারখানার মালিক শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও র্যাব সূত্র জানায়, শফিকুল ইসলাম পিতা জয়নাল আবেদীন, রথখলা হায়দ্রাবাদ মৌলভী বাড়ির পাশেই বাড়িটি ভাড়া নিয়ে গত এক বছর ধরে নিয়মিতভাবে ঘোড়া কিনে জবাই করতেন। এরপর নিষিদ্ধ এই ঘোড়ার মাংস বিভিন্ন উপায়ে রাজধানী উত্তরাসহ দেশের নানা জেলায় সরবরাহ করতেন।
র্যাব-১ এর এসপি শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গোপনে এই ঘোড়া জবাইয়ের কার্যক্রম চলছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল।
তিনি জানান, আজকের অভিযানে আমরা বিপুল সংখ্যক জীবিত ঘোড়া, রক্তাক্ত মেঝে, জবাইয়ের সরঞ্জাম ও মাংস সংরক্ষণের নানা প্রমাণ পেয়েছি।
গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও দণ্ডনীয় কার্যক্রম। এর আগে বিভিন্ন সময়ে তাকে তিনবার জরিমানা করা হয়েছিল। তবুও সে থামেনি। এবার বড় আকারে অভিযান চালানো হয়েছে। ভবিষ্যতেও অভিযান চলবে।
স্থানীয়দের ক্ষোভ এলাকাবাসী জানান, রাতে নিয়মিত ঘোড়া জবাইয়ের শব্দ, দুর্গন্ধ ও পরিবেশদূষণে তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন।
স্থানীয় দোকানদার কামাল মজুমদার বলেন, প্রতিদিন রাতে ৩০ থেকে ৪০টা ঘোড়া জবাই করত শফিকুল। সেই মাংস সারা দেশে পাঠাত। আমরা বহুবার প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু কিছু হয়নি। পুরো পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছিল। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।
এলাকার গৃহিণী হালিমা বেগম বলেন,রাতভর জবাইয়ের শব্দে ছোট বাচ্চারা পড়তে পারে না। দুর্গন্ধে ঘরেও থাকা যায় না। আমরা চাই এ ধরনের নিষিদ্ধ কাজ আর যেন না হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নিক।
অভিযানের সময় শফিকুল ইসলাম ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সহযোগী পালিয়ে যায়। র্যাব জানায়, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। জব্দ করা জীবিত ঘোড়াগুলো অস্থায়ীভাবে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নিষিদ্ধ প্রাণী জবাইয়ের অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
Comments