‘র’-এর সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দিল্লিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা 'রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং' (র)-এর সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে নয়াদিল্লির একটি আদালত। অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি হয়।
বিকাশ যাদবকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রও গুরুতর অভিযোগ তুলেছে। ওয়াশিংটনের দাবি—তিনি নিউইয়র্কভিত্তিক খালিস্তানপন্থি নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন এবং অর্থপাচারের সঙ্গে যুক্ত। তবে দিল্লির আদালতে চলমান আরেক মামলায় তাকে অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
গত সোমবার পাতিয়ালা হাউস কোর্টের অতিরিক্ত সেশন জজ সৌরভ প্রতাপ সিং লাল এ নির্দেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, একাধিকবার সমন জারি করা হলেও বিকাশ যাদব হাজির হননি। এর প্রেক্ষিতে তার জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি এবং জামিনদারের কাছে নোটিশ পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। আদালতের নথি অনুসারে, এই মামলায় বিকাশের পরিবারের একজন সদস্য জামিনদার হয়েছিলেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এর আগে বিকাশ যাদবের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে আদালত কয়েকবার তার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে ছাড় দিয়েছিল।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২৩ সালের নভেম্বরে। সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা ভারতীয় নাগরিক নিখিল গুপ্তের বিরুদ্ধে পান্নুন হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, তিনি ভারতের এক সরকারি কর্মকর্তার নির্দেশে কাজ করছিলেন। তখন সেই কর্মকর্তাকে শুধু 'সিসি-১' নামে উল্লেখ করা হয়েছিল।
এর তিন সপ্তাহ পর, ১৮ ডিসেম্বর দিল্লি পুলিশের বিশেষ শাখা রোহিনি এলাকার এক ব্যক্তির অভিযোগে বিকাশ যাদবকে অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার করে। তিনি চার মাস তিহার জেলে বন্দি থাকার পর ২০২৪ সালের এপ্রিলে জামিনে মুক্তি পান। তবে এরপর থেকে তার অবস্থান অজানা।
২০২৪ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র নতুন অভিযোগপত্র প্রকাশ করে, যেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়—'সিসি-১' আসলে বিকাশ যাদব। সেখানে তাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন কেবিনেট সেক্রেটারিয়েটের একজন কর্মকর্তা হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। যদিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তিনি আর সরকারি দায়িত্বে নেই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার মাত্র পাঁচ দিন আগে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এক উচ্চপর্যায়ের সরকারি কমিটি বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। সেই বিবৃতিতে তদন্ত প্রক্রিয়ায় কিছু ফাঁকফোকর থাকার কথাও স্বীকার করে মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া চলতি মাসে প্রকাশিত দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তদন্তকারীরা বিকাশ যাদবের সঙ্গে দুবাইভিত্তিক মহাদেব অনলাইন বেটিং নেটওয়ার্কের এক সন্দেহভাজনের সম্ভাব্য যোগাযোগও যাচাই করছেন।
Comments