হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পেতে যা করবেন

মানবদেহের সামগ্রিক সুস্থতার পেছনে হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই রাসায়নিক বার্তাবাহকগুলো শরীরের নানাবিধ প্রক্রিয়া পরিচালনায় সহায়ক। তবে অল্প পরিমাণে হরমোনের অসামঞ্জস্যতাও শরীরে তৈরি করতে পারে জটিলতা। তাই শারীরিক সুস্থতা ধরে রাখতে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হতে পারে নানা কারণে। তবে কিছু সহজ অভ্যাসের মাধ্যমে এই ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব। চিকিৎসাবিষয়ক জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হেলথলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা হরমোন ঠিক রাখতে যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত ঘুম।
খাদ্যাভ্যাস: পুষ্টিকর ও আঁশযুক্ত খাবার হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ফাইবার। ফ্লেক্স সিড, ব্রোকলি, স্প্রাউট, বাঁধাকপি, শস্যজাতীয় খাবার ও মৌসুমি ফল-মূল ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
কার্বোহাইড্রেট ও চিনি কম খাওয়া, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার (চিয়া সিড, আখরোট, চর্বিযুক্ত মাছ) হরমোন উৎপাদনে সহায়ক। তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও দুগ্ধজাত খাবার হরমোনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। অপরদিকে গ্রিন টি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সরবরাহ করে ইনসুলিন ও কর্টিসলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
শরীরচর্চা: নিয়মিত ব্যায়াম হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখে। অ্যারোবিকস, স্ট্রেংথ ট্রেইনিং কিংবা এন্ডুরেন্স ট্রেইনিং শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং প্রদাহরোধী হরমোনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: চাপগ্রস্ত জীবনে কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে শরীরের স্বাভাবিক হরমোন উৎপাদন ব্যাহত হয়। ধ্যান, যোগব্যায়াম, সঠিক বিশ্রাম ও শারীরিক সচলতা এই হরমোনগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত ঘুম: ঘুম শরীরের পুনর্গঠনের একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। রাতের পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, যার প্রভাব পড়ে মেজাজ ও শক্তির মাত্রায়। তাই প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন ঘুম নিশ্চিত করা হরমোন স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
সবশেষে, শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য হরমোনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই দৈনন্দিন জীবনে কিছু অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে হরমোনের ভারসাম্য ধরে রাখা সম্ভব এবং তা দীর্ঘস্থায়ী সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারে।
Comments