কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করার উপায়

বর্তমান ব্যস্ত জীবনে কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক—প্রায় সব বয়সের মানুষ এই সমস্যায় ভোগেন। যদিও এটি সাধারণত গুরুতর কোনো সমস্যা নয়, তবে সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এটি পাইলস বা আরও জটিল রোগে পরিণত হতে পারে। তাই আগেভাগেই সচেতন হওয়া জরুরি। চিকিৎসকদের মতে, জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনলেই সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। শুধু ওষুধে নির্ভর না করে প্রাকৃতিক উপায়েও এর সমাধান মিলতে পারে। দ্য হেলডির এক প্রতিবেদনে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করা নিয়ে কথা বলেছেন চিকিৎসকরা।
হাঁটাহাঁটি ও শরীরচর্চার গুরুত্ব
প্রতিদিন অন্তত ১০-২০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস তৈরি করুন। এতে শরীর যেমন চনমনে থাকবে, তেমনই মানসিক চাপও কমে যাবে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক অবসাদ এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। নিয়মিত শরীরচর্চা বা হাঁটাহাঁটি মনের প্রশান্তি এনে দেয়, যা পরোক্ষভাবে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
অপ্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে শাকসবজি
কার্বোহাইড্রেট শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে কিছু অপ্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেট না খাওয়াই ভালো। যেমন আলুর চিপস পরিপাকতন্ত্রের ওপর ভীষণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই এ ধরনের খাবার না খেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার খান। শাকসবজি, শস্যজাতীয় খাবার, উপকারী মনো ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট ইত্যাদি বেশি পরিমাণে গ্রহণ করুন। ওয়েবএমডির মতে, জলপাই তেলে থাকে উপকারী চর্বি। অন্ত্রে এই চর্বির একটি আস্তরণ সৃষ্টি হলে খাদ্য সহজে চলাচল করতে পারে। আর অন্ত্রের মধ্য দিয়ে খাদ্য সহজে চলাচল করা মানেই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি।
প্রচুর পানি পান
দৈনিক পর্যাপ্ত পানি না খেলে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে সঙ্গে দিনে অন্তত ২ লিটার পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি মল নরম রাখতে সাহায্য করে এবং সহজে পেট পরিষ্কার হয়।
ইসবগুলের ভুসি
কোষ্ঠকাঠিন্য বা অর্শ্বরোগ প্রতিরোধে ইসবগুলের ভুসি অত্যন্ত কার্যকর। এটি হজমে সহায়তা করে এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখে। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে উপকার মিলতে পারে।
দীর্ঘক্ষণ বসে না থাকা
অফিসে বা বাসায় একটানা বসে কাজ করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্রতি ঘণ্টায় অন্তত একবার উঠে একটু হাঁটাহাঁটি করুন বা হাত-পা নাড়ান। এটি শুধু হজম নয়, শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সচল রাখতেও সহায়তা করে।
টয়লেট টুল ব্যবহার
যারা হাই কমোড ব্যবহার করেন, তাঁদের জন্য পায়ের নিচে একটি ছোট টুল রাখা খুব উপকারী হতে পারে। এতে মলত্যাগের সময় শরীর 'স্কোয়াটিং পজিশনে' চলে আসে, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহায়ক করে। যারা লো প্যান ব্যবহার করেন, তারা স্বাভাবিকভাবেই এই সুবিধা পান।
সঠিক অভ্যাস গড়ে তুললে কোষ্ঠকাঠিন্য আর সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না। তাই ওষুধের বদলে স্বাস্থ্যকর জীবনধারায় জোর দিন। পেট থাকবে পরিষ্কার, মন থাকবে হালকা।
Comments