জমজমাট কোরবানির হাট, খুশি ক্রেতা, হতাশ বিক্রেতা ও খামারি

কোরবানির ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে লক্ষ্মীপুরের হাটবাজারগুলোতে ততই জমে উঠতে শুরু করেছে পশু কেনাবেচা। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে গরু ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি বেড়েছে। দেখা দিয়েছে ক্রেতা শূন্যতা। ক্রেতারা কিছুটা কম দামে গরু কিনে খুশি হলেও, বিক্রেতা ও খামারিরা বলছেন, গরু পালনের খরচ তোলা তো দূরের কথা, অনেক ক্ষেত্রে লোকসান গুনতে হচ্ছে। প্রাণি সম্পদ বিভাগ বলছে, পশুর কোন ঘাটতি নেই। চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু রয়েছে ৫০ হাজারের বেশি।
সরেজমিনে লক্ষ্মীপুর জেলা সদরের দালালবাজার এলাকায় অস্থায়ী পশুর হাটসহ বেশ কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা যায়, জেলার ৫টি উপজেলায় শতাধিক স্থায়ী-অস্থায়ী পশুরহাট রয়েছে। এর বাহিরে গ্রামগঞ্জে বসেছে প্রচুর হাট। এবার দেশি গরুর সরবরাহ ভালো। অনেক খামারই তাদের খামারের গরু নিয়ে হাটে আসছেন বিক্রির আশায়। কিন্তু ক্রেতারা গরুর প্রত্যাশিত দাম না বলায় তারা পড়ছেন বিপাকে।
প্রাণি সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে ছোট-বড় মিলে প্রায় তিন হাজার খামার রয়েছে। এসব খামারে ১ লাখ ৩৯ হাজার পশু কুারবানির জন্য লালন-পালন করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গত বছরে যে পশুটি বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এবার সে পশু বিক্রি হচ্ছে প্রায় লাখ টাকা। এভাবে প্রকার ভেদে প্রতিটি গরু ২০/২৫ হাজার টাকায় কম বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম কিছুটা কম হওয়ায় স্বস্তির কথা বলছেন ক্রেতা। হতাশা প্রকাশ করেছে বিক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত বারের তুলনায় প্রতি গরু ২০/২৫ হাজার টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। সারা বছর গরু লালন-পালন করেছি কুরবানিতে কিছুটা লাভের আশায়। কিন্তু বাজারে আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় লোকসানের কথা জানান তারা। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বাজারের অবস্থায় খুবই খারাপ যাচ্ছে। যদি এইভাবে বৃষ্টি থাকে, তাহলে বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে বলে আশংকা করেন ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে প্রচুর পরিমান পশু রয়েছে। প্রছন্দের পশু কিনতে পেরে খুশি অনেকেই। আবার অনেকেই বাজারের ব্যবস্থাপনা নিয়েও সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।
জেলা পুলিশ সুপার আকতার হোসেন বলেন, জেলার ৫টি উপজেলায় যেসব স্থানে পশুর হাট বসেছে। প্রত্যেকটি হাটে পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, মানুষ যেন ঈদুল আজহা সুন্দরভাবে উদযাপন করতে পারে, সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকটি হাটে জাল টাকার ছড়াছড়ি যেন না হয়, সেদিকে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারী রয়েছে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাজার মনিটরিং করছে।
Comments