পঞ্চগড়ে ১০ ডিগ্রিতে নেমে এসেছে তাপমাত্রা, স্থবির জনজীবন
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় ডিসেম্বরের শুরুতেই তাপমাত্রার পারদ ১০ ডিগ্রিতে নেমে আসায় জনজীবনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায়। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৫ শতাংশ।
হিমালয়ের কন্যা বলে খ্যাত এই জেলায় শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোর ও রাতে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। অনেকেই ভোরবেলা খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন, শ্রমজীবী মানুষের কাছে এই আগুনই এখন ভরসা। ভোর হতে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা জনপদে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঝলমলে রোদের দেখাও মেলে।
বোদা উপজেলার ভাসাইনগর গ্রামের কৃষি শ্রমিক বাবুল বলেন, 'শীতের কারণে ভোরে কাজে বের হওয়া এখন খুবই কষ্টকর। ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কিন্তু কাজ না করলে খাব কী?'
পঞ্চগড় সদর উপজেলার মোলানী পাড়া গ্রামের ফজলার রহমান বলেন, ফজরের আযানের সময় আমাদের ঘুম থেকে উঠতে হয়। তখন কনকনে ঠান্ডা থাকে। নামাজ পরে হাটতে বের হই।
আটোয়ারী উপজেলার সাতখামার গ্রামের ভ্যান চালক আশরাফুল বলেন, শীতের কারণে সকালে রাস্তায় লোকজন কম থাকে, তাই রোজগারও কমে গেছে।
এদিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, 'প্রতি বছর শীতের শুরুর দিকে কাশি, সর্দি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসা সেবা নেন। বিশেষ করে শিশু ও বেশি বয়স্করা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। এবারও একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে। আমরা সচেতনতার পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি।'
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, গত কয়েক দিন ধরে জেলার তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছিল। শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই এমন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এক বা দুইটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।
Comments