৪ ডিসেম্বর রামপুরা ২৮ হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা বনশ্রী এলাকায় ২৮ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর রাফাত বিন আলমসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের ওপর শুনানির জন্য আগামী ৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার এ আদেশ দেন। অন্য সদস্য হলেন- বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একইসঙ্গে পলাতক দুই আসামি ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম ও রামপুরা থানার সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমানের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাসুদ সালাহউদ্দিন। তিনি এ মামলার পরবর্তী শুনানি সশরীরে হাজির না হয়ে ভার্চুয়ালি করার আবেদন করেন। তবে এ বিষয়ে শুনানির জন্য একই দিন নির্ধারণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল। এদিন সকালে ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সবুজ রঙের গাড়িতে করে গ্রেপ্তার দুই সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।
সাবেক আইজিপি শহীদুলকে আক্রমণাত্মক জিজ্ঞাসাবাদ: রাজধানীর কল্যাণপুরে জাহাজবাড়ির মামলায় জিজ্ঞাসাবাদে বিরূপ ও আক্রমণাত্মক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন কারাগারে থাকা পুলিশের সাবেক আইজি শহীদুল হকের আইনজীবী সিফাত মাহমুদ শুভ। সোমবার এ সংক্রান্ত একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল-১ এ শুনানিতে এমন অভিযোগ করেন তিনি। পরবর্তী নির্ধারিত তারিখে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
এদিন শুনানিতে আইনজীবী সিফাত এ আবেদনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। তখন ট্রাইব্যুনাল জানতে চান আপনার ক্লায়েন্টের নাম কি। জবাবে তিনি সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের নাম উল্লেখ করেন। একইসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার মক্কেলকে অপ্রাসঙ্গিক নানা প্রশ্ন করা হয় বলে ট্রাইব্যুনালের কাছে অভিযোগ করেন এই আইনজীবী। তবে তার আবেদনটি অপ্রয়োজনীয় বলে ব্যাখ্যা দেন প্রসিকিউশন। প্রসিকিউশন থেকে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাদের কোনো তারিখ বা আবেদন প্রক্রিয়াধীন নেই। তাই এ মুহূর্তে এমন আবেদন সময়োপযোগী নয়।
একপর্যায়ে আইনজীবী সিফাতের উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি তো নির্দেশনা চাইছেন। কিন্তু অভিযোগ হলে আবেদন আকারে আসতে হবে। তাই পরবর্তী তারিখে আপনার কথা শুনবো।
পরে সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের আইনজীবী সিফাত মাহমুদ বলেন, আইসিটিবিডি মিসকেস ১৩/২০২৫ মামলাটির তদন্ত চলমান। এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শহীদুল হককে বেশ কয়েকবার তদন্ত সংস্থায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেখানে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার প্রতি বিরূপ ও আক্রমণাত্মক আচরণ করা হয়েছে। আবেদনে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে নির্দিষ্ট মামলার বিষয়বস্তুর বাইরেও আমার মক্কেলকে (শহীদুল হক) অনেক ধরনের প্রশ্নবাণে জর্জরিত ও হেনস্তা করা হয়েছে। যেমন তদন্ত সংস্থার যিনি প্রধান (আনসার উদ্দিন খান পাঠান) রয়েছেন, বিগত সরকারের সময় তার কেন পদোন্নতি হয়নি, এসব নিয়ে সাবেক আইজিপিকে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে ক্ষোভ ঝেড়েছেন। অথচ জিজ্ঞাসাবাদে জোর-জবরদস্তিমূলক আচরণ বা কোনো ধরনের হুমকি দেওয়ার বিধান নেই। এরপরও এমন ঘটনা ঘটায় আমরা ট্রাইব্যুনালের নজরে এনে শুনানির জন্য তারিখ চেয়েছি।
তদন্ত সংস্থার প্রধানের নাম আনসার উদ্দিন খান পাঠান উল্লেখ করে আইনজীবী সিফাত বলেন, শহীদুল হককে বেশ কয়েকবারই জিজ্ঞাসাবাদে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জাহাজবাড়িতে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এখন পর্যন্ত তাকে নেওয়া হয়েছে তিনবার। প্রত্যেকবারই তার সঙ্গে এ ধরনের আচরণ ঘটেছে বা করেছেন। এজন্য আমার উপস্থিতিতে মক্কেলকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেছি। একইসঙ্গে আইন অনুযায়ী যেন তদন্ত সংস্থা কাজ করে সেটি চাওয়া হয়েছে
Comments