সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের কর্মচারীর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন, কর্মবিরতির হুশিয়ারি
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে কর্মরত ওয়ার্ডবয় মো. পিয়াল হোসেনের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন হাসপাতালটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল এগারোটায় সদর হাসপাতালের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে বক্তারা হামলাকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একইসঙ্গে, জনবল সংকটের মধ্যেও অতিরিক্ত রোগীর সেবা দেওয়ায় সেবাগ্রহীতাদের প্রতি ধৈর্যশীল হওয়ার আহ্বান জানান হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. বিষ্ণু প্রসাদ চন্দ্র, ডা. অলক সাহা, ডা. শফিকুল ইসলাম, সিনিয়র নার্স আমেনা বেগম, মোস্তাফিজুর রহমান, মেডিকেল টেকনিশিয়ান রোমান তালুকদার, মো. জুবায়ের আহমেদ, ওয়ার্ড বয় রোমান মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, হাসপাতালে প্রতিদিন বহির্বিভাগে গড়ে ১৫০০ থেকে ২০০০ রোগীকে সেবা দেওয়া হয়, যা প্রত্যাশিত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। ইনডোরে আড়াইশত (২৫০) রোগীর বদলে প্রায় পাঁচ শতাধিক রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় জনবলের অর্ধেকেরও কম কর্মরত আছেন। যেখানে ৬৮ জন ডাক্তার দরকার, সেখানে আছেন মাত্র ৩২ জন। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চরম জনবল সংকট রয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, এত সংকটের মধ্যেও সেবার কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের উপর হামলা, মারধর করলে তাঁদের মন ভেঙে যায়। একই সাথে কাজের গতি কমে। বক্তারা সেবা গ্রহীতাদের নিকট ধৈর্যশীল হওয়ার এবং ধৈর্য ধরে সেবা নেওয়ার আহ্বান জানান। একইসাথে সেবা নিতে কোনো সমস্যা হলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে বিচার চাওয়ার পরামর্শ দেন। একইসাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দায়ী হামলাকারীকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তাঁরা।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, এই ধরনের হামলা প্রতিনিয়তই ঘটছে, কিন্তু হামলাকারীরা সঠিক বিচার পাচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো সমাধান মেলেনি। বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার মধ্যে ওই হামলাকারীকে গ্রেফতার করা না হলে আগামীকাল (বুধবার) থেকে তারা প্রতিদিন দুই ঘন্টা করে কর্মবিরতিতে যাবেন। সদর হাসপাতাল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যেখানে দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা সেবা নিতে আসেন। কিন্তু দালালদের দৌরাত্ম্য ও হামলাকারীদের ভয়ে রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও জানান বক্তারা।
উল্লেখ্য, সিরিয়াল ভেঙে আগে এক্সরে করতে না দেওয়ায় হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় মো. পিয়াল হোসেন গত সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে এক্সরে রুমে মারধরের শিকার হন। এদিন বিকেলে মারধরের শিকার ওয়ার্ডবয় মো. পিয়াল হোসেন বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্তরা হলেন, পৌর শহরের হাসননগরের বাসিন্দা আপ্তাব উদ্দিনের ছেলে ফরহাদ সওদাগর ও শিমুল সওদাগর
Comments