পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশি স্নায়ুবিক রোগে ভুগার কারণ
মিশিগানভিত্তিক নিউরোসার্জন ড. জয় জগন্নাথন জানিয়েছেন, নারীরা পুরুষদের তুলনায় বিভিন্ন স্নায়ুবিক রোগে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। অথচ এই রোগগুলোর প্রাথমিক লক্ষণ অনেক সময় নজর এড়িয়ে যায়। তিনি তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বিষয়টি তুলে ধরে লিখেছেন, অধিকাংশ মানুষ অবাক হন যখন আমি বলি নারীরা বহু স্নায়ুবিক রোগে পুরুষদের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হন, এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা বছরের পর বছর অচিহ্নিত থেকে যায়। ড. জগন্নাথনের মতে, নারীদের মধ্যে এমন কিছু 'নীরব স্নায়ুবিক রোগ' রয়েছে, যেগুলো ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় কিন্তু প্রথম দিকে গুরুত্ব পায় না। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
> মাইগ্রেন
> মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস
> অটোইমিউন নিউরোপ্যাথি
> সাইলেন্ট স্ট্রোক
তিনি বলেন, এই রোগগুলোর নাম আলাদা হলেও গল্প এক প্রথমে নিঃশব্দে শুরু হয়, ধীরে ধীরে বাড়ে, আর শেষ পর্যন্ত 'স্ট্রেস' বা 'হরমোনাল পরিবর্তন' হিসেবে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়।
হরমোন ও রোগের সম্পর্ক
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারতথ্য অনুযায়ী, মাইগ্রেন নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, যা হরমোনজনিত প্রভাবের ফল হতে পারে। একইভাবে, ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহারজনিত মাথাব্যথাও অনেক নারীকেই ভোগায়। ড. জগন্নাথনের মতে, নারীর মস্তিষ্কে হরমোন ও রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার জটিল প্রভাব থাকে, যা রোগের প্রাথমিক উপসর্গ চিনতে বাধা দেয়। তিনি বলেন. ক্লান্তি, মনোযোগে ঘাটতি, অবসাদ বা মুড পরিবর্তন এগুলো শুধু মানসিক চাপ নয়, বরং স্নায়ুর সমস্যার প্রাথমিক সতর্কবার্তা হতে পারে।
উপসর্গগুলোকে হালকাভাবে নেবেন না: ড. জগন্নাথন আরও বলেন, আমি অনেক নারী রোগীকে দেখেছি যারা বলেন, আমি ভেবেছিলাম এটা শুধু বার্নআউট। কিন্তু শরীর সবসময় সংকেত দেয় সেই সংকেতগুলো বুঝে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে জরুরি।
তিনি নারীদের প্রতি আহ্বান জানান, পুনরাবৃত্ত মাথাব্যথা, শরীরে অসাড়তা, বা দৃষ্টিসংক্রান্ত সমস্যা অবহেলা করবেন না। রক্তনালী ও হরমোনজনিত স্বাস্থ্যের যত্ন নিন কারণ এগুলো পরস্পর সম্পর্কিত। আগে থেকেই সচেতনতা রোগের গতিপথ পুরোপুরি বদলে দিতে পারে। ড. জগন্নাথনের মতে, সচেতনতা মানেই ভয় নয় বরং এটি সুরক্ষা। যত দ্রুত আমরা এই বিষয়ে কথা বলা শুরু করব, তত বেশি জীবন রক্ষা করতে পারব।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
Comments