সুনামগঞ্জে অপরিকল্পিত স্পিড ব্রেকারে দিশেহারা চালকরা

সুনামগঞ্জের সড়কগুলো এখন যেন মরণফাঁদ। শহরের প্রধান রাস্তা থেকে শুরু করে অলিগলিতেও যত্রতত্র ভাবে তৈরি করা হয়েছে অপরিকল্পিত ও অনিয়মিত স্পিড ব্রেকার। দ্রুতগতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি এই প্রতিবন্ধকগুলোই এখন দুর্ঘটনার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, 'পৌর শহরের বিহারী পয়েন্ট থেকে এসসি স্কুল পর্যন্ত মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে চারটি স্পিড ব্রেকার। এছাড়া, মরাটিলা রোডে চারটি, শান্তিবাগ ও নতুনপাড়া এলাকায় একাধিক, এবং সড়ক ও জনপথ অফিসের সামনে থেকে জেলা পরিষদ পর্যন্ত অন্তত ছয়টি স্পিড ব্রেকার দেখা গেছে। এই স্পিড ব্রেকারগুলোর অধিকাংশই কোনো নিয়ম মেনে তৈরি করা হয়নি। এগুলো এত উঁচু যে, দ্রুত গতিতে আসা গাড়ি বা মোটরসাইকেল হঠাৎ ঝাঁকুনি খায়, যা অনেক সময় চালককে নিয়ন্ত্রণ হারাতে বাধ্য করে।
সড়ক নিরাপত্তার জন্য স্পিড ব্রেকার গুরুত্বপূর্ণ হলেও, সেগুলো অবশ্যই মানসম্মত হতে হবে। কিন্তু পৌর শহরে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
তাঁরা বলছেন, দুর্ঘটনা এড়াতে অপরিকল্পিত স্পিড ব্রেকারগুলো অপসারণ করে সেগুলোর সঠিক মান নিয়ন্ত্রণ, এবং স্পিড ব্রেকারগুলোতে উজ্জ্বল রঙের চিহ্ন দিয়ে দৃশ্যমান করার ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি। তা না হলে, এই অপরিকল্পিত স্পিড ব্রেকারগুলোই সুনামগঞ্জের সড়কে নিত্যনতুন দুর্ঘটনার জন্ম দেবে।
মোটরসাইকেল চালক আবিদুর মিয়া বলেন' 'এই স্পিড ব্রেকারগুলো রাতের অন্ধকারে বা বৃষ্টির সময় একেবারেই চোখে পড়ে না। হঠাৎ করে গাড়ির সামনে এলে ব্রেক করতে হয়। এতে প্রায়ই পেছনের গাড়ি এসে ধাক্কা দেয়। বিশেষ করে, মোটরসাইকেল চালকদের জন্য এই পরিস্থিতি আরও বিপদজনক। শুধু দুর্ঘটনা নয়, এই স্পিড ব্রেকারগুলোর কারণে গাড়ির যন্ত্রাংশও দ্রুত নষ্ট হচ্ছে।'
তেঘরিয়ার বাসিন্দা সোহেল রহমান বলেন, 'যত্রতত্র স্পিড ব্রেকার গুলো চলাচলের বড় বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে। এগুলো অপসারণ করা দরকার।'
সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক কবির মিয়া বলেন, 'শহরের ভেতরে এতো স্পিড ব্রেকার, বারবার ব্রেক করতে হয়। অনেকসময় চোখেই পড়ে না এসব, যার কারণে গতি তাৎক্ষণিকভাবে কন্ট্রোল করা সম্ভব হয় না। নির্দিষ্ট পরিমাণ উচ্চতা দিয়ে অথবা সড়ক আইন অনুসরণ করে এসব স্পিড ব্রেকার নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।'
মোটরসাইকেল চালক তৌসিফ রাহী বলেন, 'অপ্রোয়জনীয় স্প্রিড ব্রেকার গুলো অপসারণ করা দরকার। কারণ, যত্রতত্র ভাবে কোনো ধরনের নিয়ম অনুসরণ না করে যেগুলো স্থাপন করা বা নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো দূর্ঘটনার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। নির্দিষ্ট দূরত্ব অনুযায়ী স্পিড ব্রেকার নির্মাণ করে তাতে উজ্জ্বল রং করে দেওয়া প্রয়োজন।'
সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, 'স্থানীয়দের চাহিদার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্থানে স্পিড ব্রেকার স্থাপন করা হয়েছে। যেগুলো স্থাপন করার কথাও না। তবে, জেলা প্রশাসন যদি এসব স্পিড ব্রেকার অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন তাহলে এক দিনের মধ্যে আমরা সেগুলো সড়িয়ে দেবো।
Comments